Header Ads

Header ADS

জুমার সংক্ষিপ্ত খুতবা

 

জুমার সংক্ষিপ্ত খুতবা 



আগামী জুমাবারে আলোচনা করতে পারেন, আমি গত বছর করেছিলাম, নেটে সিরিজ আলোচনা রয়েছে।

মুহাররম।
সংক্ষিপ্ত খুতবা,
نحمده ونصلي على رسوله الكريم أما بعد.. فأعوذ بالله من الشيطان الرجيم… بسم الله الرحمن الرحيم
إِنَّ عِدَّةَ الشُّهُورِ عِندَ اللَّهِ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا فِي كِتَابِ اللَّهِ يَوْمَ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ ۚ ذَٰلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ ۚ فَلَا تَظْلِمُوا فِيهِنَّ أَنفُسَكُمْ ۚ وَقَاتِلُوا الْمُشْرِكِينَ كَافَّةً كَمَا يُقَاتِلُونَكُمْ كَافَّةً ۚ وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ مَعَ الْمُتَّقِينَ
عن أَبِي بَكْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏
الزَّمَانُ قَدِ اسْتَدَارَ كَهَيْئَتِهِ يَوْمَ خَلَقَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضَ
السَّنَةُ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا، مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ، ثَلاَثَةٌ مُتَوَالِيَاتٌ ذُو الْقَعْدَةِ وَذُو الْحِجَّةِ وَالْمُحَرَّمُ، وَرَجَبُ مُضَرَ الَّذِي بَيْنَ جُمَادَى وَشَعْبَانَ ‏
আল্লাহ আমাদের কে জুমার সালাত আদায় করার জন্য মসজিদে উপস্থিত হওয়ার তাওফিক দান করেছেন, বলি আলহামদুলিল্লাহ।
মহররম মাস চলতেছে, এই মাসকে সামনে রেখে আমি আপনাদের সামনে সুরা তাওবার-৩৬ নং আয়াত তিলাওয়াত করলাম।
কয়েকটি ধাপে এই মাসের গুরুত্ব উপস্থাপন করার চেষ্টা করব ইন শা আল্লাহ।
সংক্ষেপে
১.মুহাররম মাসের তাৎপর্য
২.আশুরার রোযার তাৎপর্য
৩.আশুরার রোযার গুরুত্ব
৪.মুহাররমের রোযার ফজিলত
৫.আশুরার রোযার ফজিলত
৬.আশুরার দিনে করনীয়
৭.কত তারিখে রোযা রাখব?
৮.আশুরার রোযার হুকুম কী?
৯.আশুরার দিনে বর্জনীয়
১০.কারো মৃত্যুতে করনীয়
১১.বিলাপের সূচনা।
বিস্তারিত।
এক.
মুহাররাম মাসের তাৎপর্য
বছর, মাস ,সপ্তাহ ,দিন আল্লাহর নেয়ামত।
وَ ہُوَ الَّذِیۡ جَعَلَ الَّیۡلَ وَ النَّہَارَ خِلۡفَۃً لِّمَنۡ اَرَادَ اَنۡ یَّذَّکَّرَ اَوۡ اَرَادَ شُکُوۡرًا
আর তিনি দিবা-রাত্রিকে পরস্পরের অনুগামী করেছেন। যে উপদেশ গ্রহণ করতে চায় অথবা কৃতজ্ঞ হতে চায় তার জন্য।
ফুরকান-৬২
ভাবনার বিষয়,
كُلُّ النَّاسِ يَغْدُو فَبَائِعٌ نَفْسَهُ فَمُعْتِقُهَا أَوْ مُوبِقُهَا
রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন বস্তুতঃ সকল মানুষই প্রত্যেক ভোরে নিজেকে ‘আমালের বিনিময়ে বিক্রি করে। তার ‘আমাল দ্বারা সে নিজেকে (আল্লাহর ‘আযাব থেকে) মুক্ত করে অথবা সে তার নিজের ধ্বংস সাধন করেছেন।
সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৪২২
(২২৩ মাদ্রাসা পাঠ্যপুস্তক অনুসারে)
كِتَابٌ : الطَّهَارَةُ | بَابٌ : فَضْلُ الْوُضُوءِ
আমাদের উচিত সকালটা ইবাদত দিয়ে শুরু করা,
এবং আল্লাহর নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা।
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ غَنَّامٍ الْبَيَاضِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ مَنْ قَالَ حِينَ يُصْبِحُ اللَّهُمَّ مَا أَصْبَحَ بِي مِنْ نِعْمَةٍ فَمِنْكَ وَحْدَكَ لاَ شَرِيكَ لَكَ فَلَكَ الْحَمْدُ وَلَكَ الشُّكْرُ ‏ فَقَدْ أَدَّى شُكْرَ يَوْمِهِ وَمَنْ قَالَ مِثْلَ ذَلِكَ حِينَ يُمْسِي فَقَ أَدَّى شُكْرَ لَيْلَتِهِ
আবদুল্লাহ ইবনু গান্নাম আল-বায়াদী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সকালে উপনীত হয়ে বলেনঃ হে আল্লাহ্‌! সকালে আমার প্রতি যে নেয়ামত পৌছেছে তা একমাত্র আপনার পক্ষ থেকেই পৌছলো, আপনি একক, আপনার কোন শরীক নেই, সমস্ত প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা আপনারই প্রাপ্য’-সে তার ঐ দিনের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলো। আর যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় উপনীত হয়ে এরূপ বললো সে তার ঐ রাতের কৃতজ্ঞতা স্বীকার করলো।
সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৫০৭৩
أَوْلُ كِتَابِ الْأَدَبِ | أَبْوَابُ النَّوْمِ | بَابٌ : مَا يَقُولُ إِذَا أَصْبَحَ
কুরআনে বারো মাসের বর্ননা,
إِنَّ عِدَّةَ الشُّهُورِ عِندَ اللَّهِ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا فِي كِتَابِ اللَّهِ يَوْمَ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ ۚ ذَٰلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ ۚ فَلَا تَظْلِمُوا فِيهِنَّ أَنفُسَكُمْ ۚ وَقَاتِلُوا الْمُشْرِكِينَ كَافَّةً كَمَا يُقَاتِلُونَكُمْ كَافَّةً ۚ وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ مَعَ الْمُتَّقِينَ
আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন হতেই আল্লাহর বিধানে আল্লাহর নিকট নিশ্চয়ই মাসসমূহের সংখ্যা হল বারো মাস। এর মধ্যে চারটি মাস হল নিষিদ্ধ (পবিত্র)।এটাই সরল বিধান,
অতএব তোমরা এ মাসগুলোতে নিজেদের প্রতি যুলুম করো না।
সুরা তাওবা _ ৩৬
সম্মানিত চার মাসের পরিচয়,
عَنْ أَبِي بَكْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ الزَّمَانُ قَدِ اسْتَدَارَ كَهَيْئَتِهِ يَوْمَ خَلَقَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضَ، السَّنَةُ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا، مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ، ثَلاَثَةٌ مُتَوَالِيَاتٌ ذُو الْقَعْدَةِ وَذُو الْحِجَّةِ وَالْمُحَرَّمُ، وَرَجَبُ مُضَرَ الَّذِي بَيْنَ جُمَادَى وَشَعْبَانَ
আবূ বাকরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আল্লাহ যে দিন আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন, সে দিন হতে সময় যেভাবে আবর্তিত হচ্ছিল আজও তা সেভাবে আবর্তিত হচ্ছে। বারো মাসে এক বছর। এর মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত। যুল-কা’দাহ, যূল-হিজ্জাহ ও মুহাররাম। তিনটি মাস পরস্পর রয়েছে। আর একটি মাস হলো রজব-ই-মুযারা যা জুমাদা ও শা’বান মাসের মাঝে অবস্থিত।
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৩১৯৭
كِتَابٌ : بَدْءُ الْخَلْقِ | بَابُ مَا جَاءَ فِي سَبْعِ أَرَضِينَ
দুই.
আশুরার রোজার তাৎপর্য,
বনী ইসরাইল থেকে মুসা আঃ এর জাতিকে এই দিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ قَدِمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الْمَدِينَةَ فَرَأَى الْيَهُودَ تَصُومُ يَوْمَ عَاشُورَاءَ فَقَالَ مَا هَذَا قَالُوا هَذَا يَوْمٌ صَالِحٌ هَذَا يَوْمٌ نَجَّى اللهُ بَنِي إِسْرَائِيلَ مِنْ عَدُوِّهِمْ فَصَامَهُ مُوسَى قَالَ فَأَنَا أَحَقُّ بِمُوسَى مِنْكُمْ فَصَامَهُ وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ
ইব্‌নু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাদীনায় আগমন করে দেখতে পেলেন যে, ইয়াহুদীগণ ‘আশুরার দিনে সওম পালন করে। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ কি ব্যাপার? (তোমরা এ দিনে সওম পালন কর কেন?) তারা বলল, এ অতি উত্তম দিন, এ দিনে আল্লাহ তা’আলা বনী ইসরাঈলকে তাদের শত্রুর কবল হতে নাজাত দান করেন, ফলে এ দিনে মূসা (আ) সওম পালন করেন। আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমি তোমাদের অপেক্ষা মূসার অধিক নিকটবর্তী, এরপর তিনি এ দিনে সওম পালন করেন এবং সওম পালনের নির্দেশ দেন।
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ২০০৪
كِتَابٌ : الصَّوْمُ| بَابُ صِيَامِ يَوْمِ عَاشُورَاءَ
তিন.
আশুরার রোজার গুরুত্ব,
চারটা জিনিস রাসুল সাঃ কখনো ছাড়তেন না।
عَنْ حَفْصَةَ، قَالَتْ: " أَرْبَعٌ لَمْ يَكُنْ يَدَعُهُنَّ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: صِيَامَ عَاشُورَاءَ، وَالْعَشْرَ، وَثَلَاثَةَ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ، وَرَكْعَتَيْنِ قَبْلَ الْغَدَاةِ
হাফসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, চারটি আমল নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কখনো পরিত্যাগ করতেন না। আশুরার দিনের সাওম (রোযা), যিলহজ্জ মাসের নয় দিনের সাওম (রোযা), প্রত্যেক মাসে তিন দিনের সাওম (রোযা) এবং ফজরের দুরাকাআত সুন্নাত।
রমজানের রোজার পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রোজা হলো আশুরার রোজা ।
সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ২৪১৬
চার.
মুহররমের রোজার ফজিলত,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، - رضى الله عنه - قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ أَفْضَلُ الصِّيَامِ بَعْدَ رَمَضَانَ شَهْرُ اللَّهِ الْمُحَرَّمُ وَأَفْضَلُ الصَّلاَةِ بَعْدَ الْفَرِيضَةِ صَلاَةُ اللَّيْلِ
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: রমাযানের সিয়ামের পর সর্বোত্তম সওম হচ্ছে আল্লাহ্‌র মাস মুহাররমের সওম এবং ফরয সলাতের পর সর্বোত্তম সলাত হচ্ছে রাতের সলাত।
সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ২৬৪৫
পাচ.
আশুরার রোজার ফজিলত_
পূর্বের এক বছরের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়
عَنْ أَبِي قَتَادَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
صِيَامُ يَوْمِ عَاشُورَاءَ إِنِّي أَحْتَسِبُ عَلَى اللَّهِ أَنْ يُكَفِّرَ السَّنَةَ الَّتِي قَبْلَهُ
আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্‌ তা’আলার নিকট আমি আশাপোষণ করি যে, তিনি আশূরার রোযার মাধ্যমে পূর্ববর্তী এক বছরের (গুনাহ্‌) ক্ষমা করে দিবেন।
জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৭৫২
ছয়.
আশুরার দিন করনীয় -১
পুরো দিন রোজা অবস্থায় কাটানো ।
عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ مَا رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَتَحَرَّى صِيَامَ يَوْمٍ فَضَّلَهُ عَلَى غَيْرِهِ إِلاَّ هَذَا الْيَوْمَ يَوْمَ عَاشُورَاءَ وَهَذَا الشَّهْرَ يَعْنِي شَهْرَ رَمَضَانَ
ইব্‌নু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে ‘আশূরার দিনের সওমের উপরে অন্য কোন দিনের সওমকে প্রাধান্য প্রদান করতে দেখিনি এবং এ মাস অর্থাৎ রমযান মাস (এর উপর অন্য মাসের গুরুত্ব প্রদান করতেও দেখিনি)।
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ২০০৬
كِتَابٌ : الصَّوْمُ | بَابُ صِيَامِ يَوْمِ عَاشُورَاءَ
করনীয়-২
তাওবা করা,
عَنْ عَلِيٍّ، قَالَ سَأَلَهُ رَجُلٌ فَقَالَ أَىُّ شَهْرٍ تَأْمُرُنِي أَنْ أَصُومَ بَعْدَ شَهْرِ رَمَضَانَ قَالَ لَهُ مَا سَمِعْتُ أَحَدًا يَسْأَلُ عَنْ هَذَا إِلاَّ رَجُلاً سَمِعْتُهُ يَسْأَلُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَنَا قَاعِدٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَىُّ شَهْرٍ تَأْمُرُنِي أَنْ أَصُومَ بَعْدَ شَهْرِ رَمَضَانَ قَالَ ‏ إِنْ كُنْتَ صَائِمًا بَعْدَ شَهْرِ رَمَضَانَ فَصُمِ الْمُحَرَّمَ فَإِنَّهُ شَهْرُ اللَّهِ فِيهِ يَوْمٌ تَابَ اللَّهُ فِيهِ عَلَى قَوْمٍ وَيَتُوبُ فِيهِ عَلَى قَوْمٍ آخَرِينَ
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, এক ব্যক্তি তাকে প্রশ্ন করল, রামাযান মাসের পর কোন মাসের রোযা রাখতে আপনি আমাকে আদেশ করেন? তিনি তাকে বললেন, এই বিষয়ে আমি কাউকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট প্রশ্ন করতে শুনিনি। তবে হ্যাঁ এক সময় আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকটে বসা ছিলাম। এই সময় এক ব্যক্তি এসে তাঁকে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! রামাযান মাসের পর আর কোন মাসের রোযা পালনে আপনি আমাকে আদেশ করেন? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ রামাযান মাসের পর তুমি যদি আরো রোযা রাখতে ইচ্ছুক হও তবে মুহাররামের রোযা রাখ। যেহেতুএটা আল্লাহ তা'আলার মাস। এই মাসে এমন একটি দিবস আছে যেদিন আল্লাহ তা'আলা এক গোত্রের তাওবা ক্ববুল করেছিলেন এবং তিনি আরোও অনেক গোত্রের তাওবাও এই দিনে কুবুল করবেন।
জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৭৪১
أَبْوَابُ الصَّوْمِ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ | بَابٌ : مَا جَاءَ فِي صَوْمِ الْمُحَرَّمِ
সাত.
কত তারিখে রোজা রাখবো ৯_১০ ?
৯ এবং ১০ উত্তম
উদাহরণ-১
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ أَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِصَوْمِ عَاشُورَاءَ يَوْمَ الْعَاشِرِ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ ‏.‏ وَقَدِ اخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ فِي يَوْمِ عَاشُورَاءَ فَقَالَ بَعْضُهُمْ يَوْمُ التَّاسِعِ ‏.‏ وَقَالَ بَعْضُهُمْ يَوْمُ الْعَاشِرِ ‏.‏ وَرُوِيَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّهُ قَالَ صُومُوا التَّاسِعَ وَالْعَاشِرَ وَخَالِفُوا الْيَهُودَ
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, (মুহার্‌রামের) দশম তারিখে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আশূরার রোযা পালন করতে আদেশ করেছেন।
জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৭৫৫
উদাহরণ -২
عَبْدَ اللَّهِ، بْنَ عَبَّاسٍ - رضى الله عنهما - يَقُولُ حِينَ صَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ عَاشُورَاءَ وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّهُ يَوْمٌ تُعَظِّمُهُ الْيَهُودُ وَالنَّصَارَى ‏ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏
‏ فَإِذَا كَانَ الْعَامُ الْمُقْبِلُ - إِنْ شَاءَ اللَّهُ - صُمْنَا الْيَوْمَ التَّاسِعَ
‏قَالَ فَلَمْ يَأْتِ الْعَامُ الْمُقْبِلُ حَتَّى تُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন ‘আশূরার দিন সিয়াম পালন করেন এবং লোকদের সিয়াম পালনের নির্দেশ দেন, তখন সাহাবীগণ বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়াহুদ এবং নাসারা এই দিনের প্রতি সন্মান প্রদর্শন করে থাকে। এ কথা শুনে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ইনশাআল্লাহ আগামী বছর আমরা নবম তারিখেও সিয়াম পালন করব। বর্ণনাকারী বললেন, এখনো আগামী বছর আসেনি, এমতাবস্হায় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ইন্তেকাল হয়ে যায়।
সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ২৫৫৬
(১১৩৪ মাদ্রাসা সিলেবাস অনুসারে)
كِتَابٌ : الصِّيَامُ. | بَابٌ : أَيُّ يَوْمٍ يُصَامُ فِي عَاشُورَاءَ ؟
উদাহরণ-৩
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ، - رضى الله عنهما - قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ لَئِنْ بَقِيتُ إِلَى قَابِلٍ لأَصُومَنَّ التَّاسِعَ ‏ وَفِي رِوَايَةِ أَبِي بَكْرٍ قَالَ يَعْنِي يَوْمَ عَاشُورَاءَ
আবদল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আমি যদি আগামী বছর বেঁচে থাকি তবে মুহাররমের নবম তারিখেও সিয়াম পালন করব। আবূ বাক্র (রহঃ) বলেন, নবম তারিখই হচ্ছে আশূরার দিন।
সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ২৫৫৭
(১১৩৪ মাদ্রাসা পাঠ্যপুস্তক অনুসারে)
كِتَابٌ : الصِّيَامُ. | بَابٌ : أَيُّ يَوْمٍ يُصَامُ فِي عَاشُورَاءَ ؟
বিঃদ্রঃ ৯_১০ রোজা রাখা উত্তম, যা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। চাইলে ১০_১১ ও রোজা রাখতে পারবে কোন সমস্যা নেই।
প্রমাণ-
عن عبدالله بن عباس
صُوموا يومَ عاشوراءَ
وخالِفوا فيه اليهودَ
صوموا قبلَهُ يومًا وبعده يومًا
صحيح ابن خزيمة ٣‏/ ٥٠٦
ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুর বর্ননা, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা আশুরার দিনে রোজা রাখ, এবং ইয়াহুদীদের বিরোধিতা কর,নয় তারিখে অথবা এগারো তারিখে রোজা রেখে ইয়াহুদীদের বিরোধিতা কর,
সহিহ ইবনে খুজাইমা- ৩/৫০৬
আট.
আশুরার রোজার হুকুম কি❓
আশুরার রোজা মুস্তাহাব ,
عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ، رضى الله عنهما أَنَّ أَهْلَ، الْجَاهِلِيَّةِ كَانُوا يَصُومُونَ يَوْمَ عَاشُورَاءَ وَأَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم صَامَهُ وَالْمُسْلِمُونَ قَبْلَ أَنْ يُفْتَرَضَ رَمَضَانُ فَلَمَّا افْتُرِضَ رَمَضَانُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏
‏ إِنَّ عَاشُورَاءَ يَوْمٌ مِنْ أَيَّامِ اللَّهِ فَمَنْ شَاءَ صَامَهُ وَمَنْ شَاءَ تَرَكَهُ
আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
জাহিলী যুগে লোকেরা ‘আশূরার দিন সিয়াম পালন করত। রমাযানের সিয়াম ফরয হওয়ার পূর্বে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও এদিন সিয়াম পালন করেছেন এবং মুসলিমগণও। যখন রমাযানের সিয়াম ফরয হ’ল তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘আশূরার দিন আল্লাহর দিনসমূহের একটি দিন। সুতরাং যার ইচ্ছা সে এ দিন সিয়াম পালন করবে, আর যার ইচ্ছা সে তা ছেড়ে দিবে।
সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ২৫৩২
(১১২৬ মাদ্রাসা সিলেবাস অনুসারে)
كِتَابٌ : الصِّيَامُ. | بَابٌ : صَوْمُ يَوْمِ عَاشُورَاءَ
নয়.
আশুরার দিনে বর্জনীয়,
সাতটি জিনিস বর্জনীয়,
১) তাজিয়া মিছিল বের করা, কবরের মতো কিছু একটা বানিয়ে তার সামনে নজরানা পেশ করা ও মিষ্টান্ন খাওয়া
মুসলিম শুধু হালাল খাবার খাবে ।
২) মুরছিয়া পাঠ করা।
৩) মাতম করা। বিলাপ করা।
উদাহরণ-১
তারা আমাদের দলভুক্ত নয়,
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ لَيْسَ مِنَّا مَنْ ضَرَبَ الْخُدُودَ، وَشَقَّ الْجُيُوبَ، وَدَعَا بِدَعْوَى الْجَاهِلِيَّةِ
আব্দুল্লাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরশাদ করেছেনঃ যারা শোকে গণ্ডে চপেটাঘাত করে, জামার বক্ষ ছিন্ন করে ও জাহিলী যুগের মত চিৎকার দেয়, তারা আমাদের দলভুক্ত নয়।
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ১২৯৮
ইবনে মাজা-১৫৮৪
উদাহরণ-২
আমি তাদের থেকে মুক্ত,
أَبُو بُرْدَةَ بْنُ أَبِي مُوسَى ـ رضى الله عنه ـ قَالَ وَجِعَ أَبُو مُوسَى وَجَعًا فَغُشِيَ عَلَيْهِ، وَرَأْسُهُ فِي حَجْرِ امْرَأَةٍ مِنْ أَهْلِهِ
আবূ বুরদা ইব্‌নু আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ মূসা আশ‘আরী (রাঃ) কঠিন রোগে আক্রান্ত হলেন। এমনকি তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়লেন। তখন তাঁর মাথা তাঁর পরিবারভুক্ত কোন এক মহিলার কোলে ছিল।
فَلَمْ يَسْتَطِعْ أَنْ يَرُدَّ عَلَيْهَا شَيْئًا، فَلَمَّا أَفَاقَ قَالَ أَنَا بَرِيءٌ مِمَّنْ بَرِئَ مِنْهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم، إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَرِئَ مِنَ الصَّالِقَةِ وَالْحَالِقَةِ وَالشَّاقَّةِ‏
তিনি তাকে কোন জবাব দিতে পারছিলেন না। জ্ঞান ফিরে পেলে তিনি বললেন, সে সব লোকের সঙ্গে আমি সম্পর্ক রাখিনা যাদের সাথে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সে সব নারীর সাথে সম্পর্কচ্ছেদের কথা প্রকাশ করেছেন- যারা চিৎকার করে ক্রন্দন করে, যারা মস্তক মুন্ডন করে এবং যারা জামা কাপড় দিনে করে।
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ১২৯৬
كِتَابٌ : الْجَنَائِزُ | بَابُ مَا يُنْهَى مِنَ الْحَلْقِ عِنْدَ الْمُصِيبَةِ
উদাহরণ-৩
বিলাপ করা শয়তানের কাজ ।
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: مَاتَتْ زَيْنَبُ بِنْتُ رَسُولِ اللّهِ ﷺ فَبَكَتِ النِّسَاءُ فَجَعَلَ عُمَرُ يَضْرِبُهُنَّ بِسَوْطِه فَأَخَّرَه رَسُولُ اللّهِ ﷺ بِيَدِه وَقَالَ: مَهْلًا يَا عُمَرُ
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর কন্যা যায়নাব (রাঃ) মারা গেলে মহিলারা কাঁদতে লাগল। ‘উমার (রাঃ) হাতের কোড়া দিয়ে তাদেরকে আঘাত করলেন। এ অবস্থায় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘উমারকে সরিয়ে দিলেন এবং বললেন, ‘উমার! কোমল হও।
ثُمَّ قَالَ
إِيَّاكُنَّ وَنَعِيْقَ الشَّيْطَانِ» ثُمَّ قَالَ: إِنَّه مَهْمَا كَانَ مِنَ الْعَيْنِ وَمِنَ الْقَلْبِ فَمِنَ اللّهِ عَزَّ وَجَلَّ وَمِنَ الرَّحْمَةِ وَمَا كَانَ مِنَ الْيَدِ وَمِنَ اللِّسَانِ فَمِنَ الشَّيْطَانِ
আর মহিলাদের বললেন, তোমরা তোমাদের গলার আওয়াজ শয়তান থেকে দূরে রাখো (অর্থাৎ চিৎকার করে ইনিয়ে বিনিয়ে কেঁদ না)। তারপর বললেন, যা কিছু চোখ (অশ্রু) ও হৃদয় (দুঃখ বেদনা ও শোক-তাপ) বের হয় তা আল্লাহর তরফ থেকেই বের হয়। এটা হয় রহ্‌মাতের কারণে। আর যা কিছু হাত ও মুখ হতে বের হয় তা হয় শায়ত্বনের তরফ থেকে।
الجامع الصغير ٤٢٠١ صحيح
জামিউস সগীর- ৪২০১
৪) পিপাসার্তদের পানি পান করানো।
( এই দিনকেই এই কাজের জন্য কল্যাণকর মনে করা)
৫) ঈসালে সাওয়াবের জন্য কিছু পাক করা ।
৬) বাচ্চাদের খালি পায়ে রাস্তায় হাটানো ।
৭) ডোল তবলা বাজানো।
উদাহরণ-
عن أنس بن مالك
صَوتانِ ملعونانِ
দুটি আওয়াজ অভিশপ্ত,
صَوتُ مزمارٍ عند نِعمةٍ
(১) কোন নেয়ামতে ঢোল, তবলা পিটানো,
وصَوتُ وَيلٍ عند مصيبةٍ
বিপদের সময় ধ্বংসের আওয়াজ করা।
(হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহুর শাহাদাত নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য কষ্টের, তাই এই কষ্টের সময় বিলাপ, মাতম, ঢোল পিটানো এগুলো শয়তানের কাজ।
السلسلة الصحيحة ٤٢٧ إسناده حسن
সিলসিলাতুস সহিহা- ৪২৭
দশ.
কারো মৃত্যুতে করনীয়,
ধৈর্য্য ধারণ করা ও নিম্নোক্ত দোয়া পড়া ।
وَلَا تَقُولُوا لِمَن يُقْتَلُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَمْوَاتٌ ۚ بَلْ أَحْيَاءٌ وَلَٰكِن لَّا تَشْعُرُونَ
যারা আল্লাহর পথে মৃত্যুবরণ করে, তাদেরকে মৃত বলো না,বরং তারা জীবিত; কিন্তু তা তোমরা উপলব্ধি করতে পার না।
সুরা বাকারা ১৫৪
وَلَنَبْلُوَنَّكُم بِشَيْءٍ مِّنَ الْخَوْفِ وَالْجُوعِ وَنَقْصٍ مِّنَ الْأَمْوَالِ وَالْأَنفُسِ وَالثَّمَرَاتِ ۗ وَبَشِّرِ الصَّابِرِينَ
নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে কিছু ভয় ও ক্ষুধা দ্বারা এবং কিছু ধনপ্রাণ এবং ফলের (ফসলের) নোকসান দ্বারা পরীক্ষা করব; আর তুমি ধৈর্যশীলদেরকে সুসংবাদ দাও।
বাকারা-১৫৫
الَّذِينَ إِذَا أَصَابَتْهُم مُّصِيبَةٌ قَالُوا إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ
যারা তাদের উপর কোন বিপদ এলে বলে, ‘নিশ্চয় আমরা আল্লাহর এবং নিশ্চিতভাবে তারই দিকে ফিরে যাব।
বাকারা-১৫৬
أُسَامَةُ بْنُ زَيْدٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ أَرْسَلَتِ ابْنَةُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِلَيْهِ إِنَّ ابْنًا لِي قُبِضَ فَائْتِنَا‏.‏ فَأَرْسَلَ يُقْرِئُ السَّلاَمَ وَيَقُولُ ‏ إِنَّ لِلَّهِ مَا أَخَذَ وَلَهُ مَا أَعْطَى وَكُلٌّ عِنْدَهُ بِأَجَلٍ مُسَمًّى، فَلْتَصْبِرْ وَلْتَحْتَسِبْ
উসামাহ ইব্‌নু যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জনৈকা কন্যা (যায়নাব) তাঁর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিকট লোক পাঠালেন যে, আমার এক পুত্র মরণাপন্ন অবস্থায় রয়েছে, তাই আপনি আমাদের নিকট আসুন। তিনি বলে পাঠালেন, (তাঁকে) সালাম দিবে এবং বলবেঃ আল্লাহরই অধিকারে যা কিছু তিনি নিয়ে যান আর তাঁরই অধিকারে যা কিছু তিনি দান করেন। তাঁর নিকট সকল কিছুরই একটি নির্দিষ্ট সময় আছে। কাজেই সে যেন ধৈর্য ধারণ করে এবং সওয়াবের অপেক্ষায় থাকে।
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ১২৮৪
এগারো,
বিলাপের সূচনা,
হযরত হুসাইন রাযি.-এর শাহাদাতের পর থেকে তিন শ বছর পর্যন্ত ১০ মুহাররমে কান্নাকাটি, আহাজারি, চিৎকার ও বুক চাপড়ানোর প্রথার কোনো অস্তিত্ব ছিল না। সর্বপ্রথম ৩৫২ হিজরীতে মুঈযযুদ দাওলা দাইলামী (একজন শিয়া) দশ মুহাররমে শুধু বাগদাদে হযরত হুসাইন রাযি.-এর জন্য মাতম করার হুকুম জারি করে। এরপর ৩৬৩ হিজরীতে আল-মুঈযযু লিদীনিল্লাহি ফাতিমী (বেদ্বীন কট্টর শিয়া) মিশরেও এই হুকুম জারি করে। একথা সত্যান্বেষী ইতিহাসবিদদের কাছে প্রসিদ্ধই আছে। উদাহরণস্বরূপ ইবনুল আসীর কর্তৃক রচিত ‘আল-কামেল ফিত তারীখ’ ৭/২৭৯, ইবনে কাসীর রাহ. কর্তৃক রচিত ‘আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া’ ‘১৫/২৬১ (৩৫২ হিজরীর ঘটনাবলী) ও হযরত মাওলানা হাবীবুর রহমান আযমী রাহ. কৃত ‘ইবতালে আযাদারী’ কিতাবে এর সুস্পষ্ট বিবরণ দেখা যেতে পারে।
খোদ শিয়া মুসান্নিফগণও একথা সুস্পষ্টভাবে লিখেছেন। আমীর আলী শিয়া তার ‘স্পিরিট অফ ইসলাম’ বইয়ে যেমন লিখেছেন-
Muiz ud-dowla also instituted the yeum-i-aashura, the day of mourning, in commemoration of the martyr-dom of Hussain and his family on the plains of kerbela.
মুইজ-উদ-দৌলা কারবালার সমতল ভূমিতে হোসাইন ও তার পরিবারের শহীদদের স্মরণে ইয়াউম-ই-আশুরাকে শোকের দিন হিসেবে ও প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
তিনি তার দ্বিতীয় বই ‘হিস্ট্রি অফ দ্য সারাসেনস’-এ লিখেছেন-
He was a shiah;
তিনি একজন শিয়া ছিলেন,
and it was he who established the 10th day of the moharram as a day of mourning in commemoration of the massacre of kerbala.
এবং তিনিই কারবালার গণহত্যার স্মরণে মহররমের 10 তম(আশুরার দিনকে) দিনটিকে শোকের দিন হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
আরো দ্রষ্টব্য শিয়া ইতিহাসবিদ শাকির হুসাইন নাকভীর কিতাব ‘মুজাহিদে আযম’ পৃষ্ঠা : ৩৩২
(মাসিক আল কাউসার)

No comments

Powered by Blogger.