মেরাজের বয়ান ৬ষ্ঠ পর্ব:
*** মেরাজের বয়ান ৬ষ্ঠ পর্ব:
জিবরাইল (আঃ) এর জবানে এসব কথা শুনে তিনি খুশি হয়ে আল্লাহ পাকের শুকরিয়া আদায় করলেন এবং হাউজে কাওছার হতে (বিসমিল্লাহ) বলে এক গ্লাস পানি পান করলেন। অতঃপর বিশ্বনবী অত্যন্ত খুশি হয়ে হাউজে কাওছারের দরিয়ায় সাঁতার কাটলেন। আর প্রাণ ভরে এর সুমিষ্টি পানি পান করলেন। এরপর বোরাকে চড়ে তিনি সীমান্ত এলাকা সিদরাতুল মোনতাহায় চলে গেলেন। ঐ বর্ডারে গিয়ে জিবরাইল (আঃ) বলেন, হুযুর! এখন বোরাক থেকে নামেন। তিনি বললেন, ভাই জিবরাইল (আঃ) আমি প্রভুর দরবারে এসে গেছি নাকি? জিবরাইল (আঃ) বললেন, না হুযুর প্রভুর দরবার আরো বহু দূরে, এটা বর্ডার, রাজধানী আরো বহু দূরে। তবে ভাই জিবরাইল (আঃ) আমাকে কেন বোরাক থেকে নামিয়ে দিলে? জিবরাইল (আঃ) বলেন, হুযুর এই বর্ডার থেকে যদি সামান্য পরিমাণ উপরের দিকে উঠার চেষ্টা করি, তাহলে আমি জিব্রাইলের ছয়শত পাখাসহ বোরাক জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যাব। (বাশদ রাহমান, জিবরাইলো বা খোদ ইয়া রাসুলাল্লাহ, আদিদা দান, রাওয়াম বানা, বাছুদাদি পারো বালাম) হুযুর এখানে আপনি উঠতে পারবেন। এ সীমান্ত এলাকার উপরে আল্লাহর নূর বিরাজ করছে। এখানে আমি উঠলে বোরাক উঠার চেষ্টা করলে আমি বোরাকসহ জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যাবো। এটা আমার থাকার জায়গা। আমি এখানে অপেক্ষা করলে আল্লাহ পাক এখানে এসে পয়গম্বরদের কাছে সংবাদ নিয়ে যাওয়ার জন্য খবর দিয়ে দিলে আমি এখান হতে দুনিয়াতে খবর নিয়ে যাই। (সুবহানাল্লাহ)
হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এখন আপনার জন্য রফ রফ চলে আসবে। রফ রফের গতি পাওয়ার বোরাকের চেয়েও আরো কয়েক হাজার গুণ বেশি। এটা নূরের তৈরী একটা সিংহাসন, বসার মত একটা আসন।
এর মধ্যে রফ রফ চলে আসল। নবী আমার রফ রফে উঠে বসলেন। রফ রফ বিদ্যুত গতিতে উপরের দিকে ছুটে চলছে চারদিকে নীরব। রফ রফ নরম তুল তুলে দামি বিছানার মত ছিল। সূর্যের আলোর চেয়েও উজ্জল আলো। এক স্থানে গিয়ে রফ রফ থেমে গেল। তিনি সেখানে গিয়ে ইস্রাফিল (আঃ) এর সাক্ষাত পেলেন। ইস্রাফিল (আঃ) এর পাও সাত তবক জমিনের নিচে এবং মাথা আরশে আযীমে পৌছে। তার চারখানা, ডানা বিশ্বজগতকে বেষ্টন করে রেখেছে এবং মুখে একটি বিরাট শিঙ্গা রেখে আল্লাহ পাকের আদেশের প্রতীক্ষা করছে। তার শরীর এত বড় যে, সাত সাগরের পানি তার মাথার উপর ঢেলে দিলে, এক ফোঁটা পানিও মাটিতে পড়বে না। সবই তার শরীরে শুকিয়ে যাবে। তার মাথা হতে পা পর্যন্ত জাফরানী রংয়ের পশমে ঢাকা। তার অসংখ্য মুখ, প্রত্যেক মুখে অসংখ্য ভাষায় কথা বলতে পারে। সর্ব প্রধান মুখে শিঙ্গা রেখেছে। ইস্রাফিল (আঃ) বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সালাম দিলেন। তিনি সালামের উত্তর দিয়ে সামনে অগ্রসর হলেন। রফ রফ নবীকে নিয়ে নূরের জগৎ অতিক্রম করতে লাগল। মুহুর্তের মধ্যে ৭০ হাজার নূরের পর্দা অতিক্রম করে রফ রফ গিয়ে আরশে আযীমের সিড়ির গোড়ায় থেমে গেল। এক একটি পর্দার দূরত্ব অপরটি হতে পাঁচশত বৎসরের রাস্তা ছিল। চারদিকে শুধু নূর আর নূর। আগুন আর আগুন। কোন সাড়া শব্দ নাই। প্রত্যেক নূরের পর্দার আলাদা আলাদা রং। তিনি ভয় পেতে লাগলেন। এমন সময় তিনি আবু বকরের আওয়াজ শুনতে পেলেন। হে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাড়ান, আপনার প্রভু নামায পড়ছেন। ইহা শুনে নবীজীর ভয় দূর হয়ে গেল বটে কিন্তু তিনি চিন্তা করতে লাগলেন।
এত দূরে আবু বকরের গলার আওয়াজ কেমন করে আসল। তিনি আরও তাজ্জব হলেন। আমরা পড়ি মাওলার নামায, মাওলা পড়ে কার নামায? এখানে মাওলা পাকের নামায পড়ার অর্থ হল মাওলা পাক বান্দার উপর রহমত বর্ষণ করতেছেন। এমন সময় আল্লাহ পাক ডেকে বলেন, হে আমার হাবীব! আমার আরশের উপর কদম রাখুন। হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিচের দিকে তাকিয়ে জুতা খুলতে লাগলেন। আল্লাহ পাক ডেকে বলেন বন্ধুরে! জুতা খোলার দরকার নেই। তিনি বলেন, মাবুদগো তোমার আরশে আযীমে জুতা নিয়ে আমি কেমন করে ঢুকব? সেজন্য আমি জুতা খুলি। আকাশ থেকে জওয়াব আসলো, বন্ধুরে আপনার জুতার ধূলি আমার আরশে চায়। তিনি জুতা নিয়ে আরশে আযীমে অবতরণ করলেন। আরশের সৌন্দর্য দেখে তিনি ভাবতে লাগলেন, না জানি আমার মাওলা কত সুন্দর। গিয়ে দেখেন আরশের ডান দিক দিয়ে তিনশত বার খানা স্বর্ণের চেয়ার। বাম দিকে একখানা জাঁকজমক পূর্ণ ইয়াকুতের চেয়ার। তিনি বললেন হে মাবুদ! মাবুদগো তুমি ডান দিক দিয়ে তিনশত বার খানা মিম্বর বানিয়ে রেখেছ, বাম দিকে একটা মিম্বার আলাদা কেন? আল্লাহ পাক বলেন, বন্ধুরে তিনশত বার খানা মিম্বর আমি রাখছি তিনশত বারজন পয়গাম্বরের জন্য, আমার বন্ধুর মিম্বর আমি আলাদা বানিয়েছি। তিনশত মিম্বারের নিচে আমি জান্নাতগুলি বানিয়েছি, তোমার মিম্বরের নিচে আমি জাহান্নাম বানিয়েছি। নবী ডেকে বলেন, মাবুদ কেনগো কি হেকমত বিরাজ করছে? আল্লাহ পাক ডেকে বলেন, বন্ধুরে হাশরের কঠিন ময়দানে সিংহাসনে আসন গ্রহণ করবে। তোমার গুনাহগার উম্মতগুলোকে হাতে পায়ে রশি লাগিয়ে যখন জাহান্নামের দিকে টেনে নিয়ে যাবে। তখন উম্মতেরা এক নজর তোমার চেহারা দেখার জন্য পাগল হয়ে যাবে। রাসুল গো রাসুল বলে কাঁদবে। আর উম্মতের আওয়াজ তোমার কানে শুনলে উম্মাতের কান্ডারী উম্মতের জন্য তোমার মায়া লাগবে। সাথে সাথে আমার কাছে দরখাস্ত করবে, মাবুদগো আমার উম্মত জাহান্নামে যায়। বন্ধুরে তোমার দরখাস্ত হাশরের মাঠে আমার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে।
জাহান্নামের পথ থেকে ফিরিয়ে তোমার গুনাহগার উম্মতকে আমি জান্নাতে পৌছিয়ে দিব। আরশে আযীম থেকে আল্লাহর হাবীব আরো উপরে চলে গেলেন রফ রফ চড়ে। সেটা হলো কাবা কাওসাইন,
وهُوَ بِالْأُفُقِ الْأَعْلَى ثُمَّ دَنَا فَتَدَلَّى فَكَانَ قَابَ قَوْسَيْنِ أَوْ أَدْنَى وَأَوْحَى إِلَى عَبْدِهِ مَا أوحى.
উচ্চারণ: ওয়া হুয়া বিল উফুকিল আলা ছুম্মাদানা ফাতাদাল্লা ফাকানা কাবা কাওসাইনি আও আদনা, ওয়া আওহা ইলা আবদিহি মা আওহা।
আল্লাহর হাবীব আল্লাহর আরো কিনারে চলে গেলেন, সেটা হলো হিজাজে কোবরা আল্লাহর রহমতি বরকতি পর্দার পাশে হাজিরহয়ে গেলেন। তিনি একাকী অবস্থায় ভয় পেতে লাগলেন। আর দেখলেন আরশের প্রতিটি বস্তুর মাঝে স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে,
لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللَّهِ.
উচ্চারণ: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ।
চারিদিকে নীরব, নবীজী ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছেন। এমন সময় আল্লাহ পাক শেষ নূরের পর্দাখানা উঠিয়ে বললেন, হাবীব আমার, বন্ধু! বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে গেলে কত কিছু নিয়ে যায় তুমি আমার বাড়িতে বেড়াতে এসেছ কি নিয়ে আমি আল্লাহ তা জানতে চাই। (সুবহানাল্লাহ) এবার রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ডেকে বলেন, আল্লাহগো। আমি একেবারে খালি হাতে আসি নাই তোমার দরবারে, আমি ঐ জিনিস নিয়ে এসেছি, যে জিনিসের জন্য তুমি মানুষ সৃষ্টি করেছ।
وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونَ.
উচ্চারণ: ওয়ামা খালাকতুল জিন্না ওয়াল ইনসা ইল্লা লিইয়াবুদুন।
(সূরা যারিয়াত, আয়াত, ৫৬)
ইবাদতের জন্য তুমি মানুষ আর জ্বিন সৃষ্টি করেছ, আমার ক্ষুদ্র জীবনের তসবীহ তাহলীল, পবিত্রতা গুণ-গান প্রভুর নামে আমি যা গাইছি, সব আমি গাঠুরি বেধে আমি আপনার জন্য নিয়ে এসেছি,
التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ
উচ্চারণ: আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াস সালা ওয়াতু, ওয়াতত্বাইয়্যিবাতু। হাদিয়া পেশ করে দিলেন। এবার হাদিয়া পেয়ে আল্লাহ পাক উত্তর, দিলেন,
السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ
উচ্চারণ: আসসালামু আলাইকা আইয়ূ হান্নাবিয়্যু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।
ও আমার হাবীব আমার সালাম, আমার করুনা, আমার বরকত, আমার রহমত, সব আমি তোমাকে দিয়ে দিলাম। (সুবহানাল্লাহ)
নবী আমার ডেকে বলেন, ও আল্লাহ এত সুখ আমার একাকী ভোগ করা সমীচিন কিনা? তোমার দেওয়া নেয়ামত, বরকত আমি সব নিয়ে গেলে দুনিয়ার সমস্ত হতভাগা ঈমানদার বান্দা বান্দীরা যেন তোমার দেওয়া শান্তি পরিপূর্ণভাবে পেতে পারে এজন্য আমি উহা সমান ভাগেভাগ করে দিলাম।
السَّلَامُ عَلَيْنَا وَ عَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ
উচ্চারণ: আসসালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সালিহীনা।
তখন আল্লাহ পাক অতি নিকটে এসে আবেগের সাথে নিজের কুদরতী ডান হাত খানা নবীজীর পিঠে রাখলেন, নবী বলেন, মাওলা পাকের হাতের ছোয়া পেয়ে আমার প্রাণ শীতল হয়ে গেল এবং আমার শরীর নূরের জ্যোতিতে ভরে গেল এবং মাওলার দেওয়া এলমে আউওয়ালিন ও এলমে আখেরীনে আমার বক্ষ ভরপুর হয়ে গেল। ভক্তিতে নত হয়ে আমি মাওলা পাকের কুদরতী পায়ের উপর সেজদায় পড়ে গেলাম। আমার তাপিত প্রাণ শীতল হয়ে গেল। আমি এমন মাওলার দরবারে হাজির হয়েছি, যার চাইতে আর কেউ বড় নেই। ভালবাসার এমনই প্রাণ কেন্দ্রে সেজদায় পড়েছি, তিনি এমনই আপন, যার চাইতে আপন আর কেউ নাই। আমার নবীর এহেন উদারতা আল্লাহ পাকের সামনে ভক্তির নবুওয়াতী কায়দা দেখে ফেরেশতারা এক স্বরে সাক্ষ্য দিলেন,
أَشْهَدُ أَنْ لَّا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ.
উচ্চারণ: আশহাদু আল লা ইলাহা, ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু।
অর্থ: আমরা সাক্ষ্য দিতেছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদই নাই, আমরা আরো সাক্ষ্য দিতেছি যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও তাঁর প্রেরিত রাসুল।
এ চার খণ্ড কালাম একত্রিত হয়ে তাশাহহুদে পরিণত হয়েছে। তাশাহহুদ ব্যতিত নামায পূর্ণ হয় না। অতঃপর আমার নবী বলেন, ওগো আমার মাবুদ! আপনার প্রিয় বন্ধু ইব্রাহীমকে আপনি যে মর্যাদা এবং অধিকার দিয়েছিলেন আমাকেও সেরুপ মর্যাদা, অধিকার দিয়েছেন কিনা?
আল্লাহ পাক বলেন, আমি ইব্রাহীমকে গ্রহণ করেছিলাম বন্ধু রূপে, আর আপনাকে গ্রহণ করেছি আমার পরম বন্ধু সাথী রূপে এবং আমার নিজ নামের সাথে আপনার নাম সংযুক্ত করে রেখেছি। ইব্রাহীমকে আমি রক্ষা করেছি নমরুদের অগ্নিকুণ্ড হতে। আর আপনাকে আপনার উম্মতকে রক্ষা করব জাহান্নামের অগ্নিকুণ্ড হতে, আমার নবী খুশী হয়ে পুনরায় বললেন, মাবুদ গো! আপনি মুসা (আঃ)-কে তুর পাহাড়ে নিয়ে কথা বলেছিলেন এবং তাওরাত কিতাব দান করেছেন। তার শত্রু ফেরাউনকে দলবলসহ নীল নদে ডুবিয়ে তাকে বিজয়ী করেছেন। অনুরূপভাবে আমাকে আপনি কি দান করতেছেন? আল্লাহ পাক বলেন, মুসার সাথে কথা বলেছিলাম আমি তুর পাহাড়ে বহুদূরে থেকে। আর আপনার সাথে কথা বলতেছি আমি আরশে এনে মুখোমুখি বসে। মুসাকে শত্রুর কবল হতে নীল নদী পার করিয়েছিলাম। আর আপনার উম্মতদিগকে আমি পার করিয়ে দিব ভীষণ আখেরাতের ব্রীজ ত্রিশ হাজার বৎসরের রাস্তা পুলসিরাত, চুলের চেয়ে চিকন তলোয়ারের চেয়ে ধারাল, অমাবশ্যার রাত্রের চেয়েও অন্ধকার কোন ধরনী থাকবে না। আমার নবী পুনরায় আরজ করলেন, মাবুদ গো আপনি দাউদ নবীকে সমগ্র দুনিয়ার বাদশাহী দিয়েছিলেন এবং লৌহকে মোমের মত গলাবার ক্ষমতা দিয়ে ছিলেন। আমাকে অনুরূপ কি দিতেছেন? আল্লাহ পাক বললেন, আমি দাউদকে দুনিয়ার বাদশাহী দান করেছিলাম। আর আপনাকে দুনিয়া ও আখেরাত উভয় জাহানের বাদশাহী দান করলাম। হাশরের ময়দানে ও বেহেশতে আপনিই হবেন নবীগণের নেতা, দাউদের জন্য লৌহকে মোমের মত নরম করে দিয়েছিলাম। আর আপনার জন্য সারা বিশ্ব জগতটাকে নরম করে দিলাম। মানব-দানব, জ্বীন-পরী, পশু- পাখী, কীট-পতঙ্গ সকলেই আপনার নিকট মাথা নত করবে। আর মোমের মত নরম থাকবে। তিনি পুনরায় আরজ করলেন, মাবুদ! আপনি হযরত ঈসা (আঃ)-কে ইনজিল কিতাব দান করেছেন এবং মৃত্যুকে জীবিত করার, অন্ধ, আতুর, কুষ্ঠ রোগীকে আরোগ্য করার ক্ষমতা দান করেছিলেন। অনুরূপভাবে আমাকে কি দান করতেছেন? আল্লাহপাক বললেন, আমি হযরত ঈসাকে ইনজিল কিতাব, মুসাকে তাওরাত কিতাব, দাউদকে যাবুর কিতাব দান করেছিলাম। এখন ঐসব কিতাব বাতিল করে উহার সার মর্ম কোরআন মজীদ লৌহমাহফুজ হতে আপনাকে দান করলাম। ঈসাকে মৃতলোক জীবিত করার ও কুষ্ঠ রোগীকে আরোগ্য করার ক্ষমতা দিয়ে ছিলাম। আর আপনাকে বিশ্ব জগতের জন্য রহমত স্বরূপ পাঠিয়েছি। আপনার উম্মতকে আমি সকল নবীর উম্মতের সেরা সম্মানিত করেছি।
(৭ম পর্ব আসিতেছে ইনশাআল্লাহ)
No comments