প্রতি মাসে আইয়ামে বীজ এর সিয়াম
![]() |
প্রতি মাসে আইয়ামে বীজ এর সিয়াম |
◉ প্রতি মাসে আইয়ামে বীজ এর সিয়াম :-
▬▬▬▬▬▬

▬▬▬▬▬▬






চন্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখকে আইয়ামে বীয (إيام بيض) বলা হয়। বীয (بيض) শব্দের অর্থ উজ্জ্বল। এ তিন রাতে চাঁদ বেশি উজ্জ্বল থাকে তাই সেগুলোকে বীয বলা হয়েছে।
এ তিন দিন সিয়াম থাকা উত্তম। আবু যর রাদিয়াল্লাহু আ’নহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
إِذَا صُمْتَ شَيْئًا مِنَ الشَّهْرِ ، فَصُمْ ثَلَاثَ عَشْرَةَ ، وَأَرْبَعَ عَشْرَةَ ، وَخَمْسَ عَشْرَةَ
“প্রত্যেক মাসে কিছু (নফল) সিয়াম পালন করলে (চন্দ্র মাসের) ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে পালন করো।”
(তিরমিযীঃ ৭৬১, নাসায়ীঃ ২৪২৪, শায়খ আলবানীর মতে হাসান সহীহ, তাহকীক রিয়াদুস সালেহীন)
তবে কেউ যদি সে সময় না রাখতে পারে বরং অন্য সময় তিনটি সিয়াম রাখে তবে একই সওয়াব পাওয়া যাবে, ইনশাআল্লাহ।

প্রতি মাসে তিনটি করে নফল সিয়াম রাখা অত্যন্ত ফযিলত পূর্ণ কাজ। চাই তা মাসের শুরুতে হোক, মাঝখানে হোক বা শেষে হোক। চাই লাগাতার রাখা হোক বা বিচ্ছিন্নভাবে রাখা হোক।

আল্লাহ্ তা’আলা বলেছেন, সওম ব্যতীত আদম সন্তানের প্রতিটি কাজই তাঁর নিজের জন্য, কিন্তু সিয়াম আমার জন্য। তাই আমি এর প্রতিদান দেবো।
(সহিহ বুখারী ১৯০৪)
❖ আবু দরদা রাদিয়াল্লাহু আ’নহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
أوصاني خليلي بثلاث لا أدعهن حتى أموت صوم ثلاثة أيام من كل شهر وصلاة الضحى ونوم على وتر .
رواه البخاري ( 1124 ) ومسلم ( 721 )
“আমার প্রিয় বন্ধু (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে এমন তিনটি কাজের অসিয়ত করেছেন, যা আমি যতদিন বেঁচে থাকবো, কখনোই ত্যাগ করবো না। সেগুলো হচ্ছে: প্রতি মাসে তিনটি করে সিয়াম পালন করা, চাশতের সালাত পড়া এবং বিতির সালাত না পড়ে ঘুমাতে না যাওয়া।”
(সহীহ মুসলিমঃ ৭২২)

এভাবে প্রতি মাসে ৩টি সিয়াম রাখলে সারা বছরই নফল সিয়াম রাখার সমান সওয়াব পাওয়া যাবে , ইন শা’ আল্লাহ।

আবূ হুরাইরাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’র একটি হাদীসে তিনি বলেছিলেন :
‘‘হে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমাকে একটি অতি উত্তম নেক আমলের নির্দেশ দিন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি সিয়াম পালন কর। কেননা এর সমমর্যাদা সম্পন্ন কোন আমল নেই।’’
(নাসাঈ : ২২২২)

হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
‘‘সিয়াম পালনকারী শুধুমাত্র আমাকে খুশী করার জন্যই পানাহার ও যৌন উপভোগ পরিহার করে।’
(১৮৯৪)
জাহান্নাম থেকে বাঁচার জন্য সিয়াম একটি মজবুত দূর্গ :
হাদীসে আছে,
‘‘সিয়াম ঢালস্বরূপ এবং জাহান্নাম থেকে বাঁচার এক মজবুত দূর্গ।’’
(আহমাদ : ৯২২৫)

এ বিষয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
(ক) ‘‘যে কেউ আল্লাহর রাস্তায় (অর্থাৎ শুধুমাত্র আল্লাহকে খুশী করার জন্য) একদিন সিয়াম পালন করবে, তদ্বারা আল্লাহ তাকে জাহান্নামের অগ্নি থেকে সত্তর বছরের রাস্তা পরিমাণ দূরবর্তীস্থানে রাখবেন।
(বুখারী : ২৮৪০; মুসলিম : ১১৫৩)
(খ) ‘‘যে ব্যক্তি একদিন আল্লাহর পথে সিয়াম পালন করবে আল্লাহ তার কাছ থেকে জাহান্নামকে সত্তর বছরের রাস্তা দূরে সরিয়ে নেবেন।
(মুসলিম : ১১৫৩)

صيام ثلاثة أيام من كل شهر صيام الدهر
“প্রতি মাসে তিনটি করে সিয়াম রাখা, সারা বছর ধরে সিয়াম রাখার সমান।”
(সহীহুল বুখারীঃ ১১৫৯, ১৯৭৫)
উপরোক্ত অনেকগুলো সহীহ হাদীস দ্বারা এই তিন দিন সিয়াম রাখার জন্য উৎসাহিত করার প্রমাণ পাওয়া যায়। এ সিয়ামগুলো নবী (সাঃ) এর সারা জীবনের সুন্নত।

(আল্লাহু আলাম)

আমীন।
No comments