সামিয়ার জীবনী কাহিনী (২য় পর্ব )



সামিয়ার জীবনী কাহিনী  (২য় পর্ব )

 ~ফজরের_আজান।


পর্ব: ২

সামিয়া বসার ঘরে প্রবেশ করে সালাম জানালো এবং তাদের অনুমতি নিয়ে বসলো।সামিয়াকে তারা কিছু ইসলামিক প্রশ্ন করলো।সামিয়া কতটুকু দ্বীনদারী মেয়ে? এটা বুঝার জন্য একজন মহিলা প্রশ্ন করলেন : তুমি কি আমাদের এমন একটা আমল শিখাবে যেটার ফজিলত অনেক এবং তুমি সেই আমল করে ফজিলত পেয়েছো?
সামিয়া তার পছন্দের আমলটি উপস্থাপন করলো।আল্লাহর ৯৯ টি নাম 🌺সে না দেখে মূখুস্ত তেলাওয়াত করে শুনালো।
যে ব্যক্তি আল্লাহর ৯৯ টি নাম স্মরন রাখবে ,সে জান্নাতে প্রবেশ করবে ।( সহিহ বুখারী -২৫৪৯)
সামিয়ার ব্যবহার এবং কথায় তারা সামিয়াকে খুব পছন্দ করলো।
পরেরদিন ফজরের আজান এর জন্য সামিয়া অপেক্ষা করছে কিন্তু আজ সেই মনমুগ্ধকর আজানের ধ্বনি সামিয়া শুনতে পেলো না ।সামিয়ার একটু মন খারাপ হলো।
দুপুর গড়িয়ে এলো ।সামিয়া তার ইবাদত শেষ করে খেয়ে বিশ্রাম নিচ্ছে।
মুজাদ্দেদে আলফে সানী (রহ:) বলেন: সুন্নাতের নিয়তে দুপুরে কিছুক্ষণ শয়ন করা সুন্নাতের বরখেলাপ করে কোটি কোটি রাতের ইবাদত অপেক্ষা উওম।
(ঘুম না আসলে শুধু শুয়ে থাকলেও এ সুন্নাত আদায় হয়ে যাবে )।
আছরের নামাজ শেষ করতেই সামিয়ার মা সামিয়াকে বসার ঘরে আসতে বললো।
সামিয়া বসার ঘরে প্রবেশ করেই চমকে উঠলো।কারন কালকের দুজন মহিলার সাথে আজ একজন সুদর্শন ছেলেও এসেছে।সামিয়ার মা সামিয়াকে কিছু না জানানোর জন্য সে আচমকা অনেক ভয় ও লজ্জা পেয়েছে।সামিয়ার সালাম দিতে দেরি হওয়াই দুজন মহিলার ভেতরে একজন সামিয়াকে সালাম দিলো ।সামিয়া আবার ও বেশ লজ্জা পেলো।
(রাসুলুল্লাহ (সা:) ছোট- বড় যাকেই দেখতেন সবাই কেই সালাম দিতেন)
আজ সামিয়াকে তেমন প্রশ্ন করলো না।কারন সামিয়াকে তাদের পছন্দ।সামিয়াকে শুধু চোখের দেখা দেখানোর জন্য এই সাক্ষাৎ এর আয়োজন করা হয়েছে।
জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা:) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা:) বলেছেন: তোমাদের কেউ যখন কোন মেয়েকে বিয়ে করার ইচ্ছা করে তখন যতদূর সম্ভব তাকে দেখে নিয়ে এ মর্মে নিশ্চিন্ত হোওয়া উচিত যে,মেয়েটির মধ্যে এমন কিছু আছে যা তাকে বিয়ে করার প্রতি আকৃষ্ট করে ।( আহমদ ও আবু দাউদ ,সনদ হাসান সহিদুল জামে হা / ৫০৬)
শাইখ উসাইমিন রহ বলেন : পাএ এর জন্য পাত্রী কে যা দেখা জায়েজ ,যেমন: চেহেরা ,পায়ের পাতা,মাথা ও ঘাড়।শর্ত হলো তার সাথে নির্জনতা অবলম্বন করবে না।
সামিয়ার মা ছেলেটির নাম জিঙ্গাসা করলেন।আর সাথের দুজন মহিলা তার আম্মি জান এবং চাচি।
ছেলেটির নাম আবু সাঈদ ।দেখতে মাশ আল্লাহ ।লম্বা ,গায়ের রং শ্যমলা,মুখে চাপ দাড়ি ,মাথায় ঘন চুল।পেশায় :সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার।কিন্তু বাহির থেকে দেখতে পাক্কা হূজুর।তারা সামিয়াকে দেখে চলে গেলো।রাতে ফোন আসলো সামিয়ার বাবার ফোনে ।সামিয়াকে তাদের পছন্দ। সামিয়ার বিয়ের দিন ধার্য করা হলো।
আজ সামিয়ার বিয়ের দিন।
রাসুল (সা:) বলেন : যে বিবাহে খরচ কম সে বিবাহে অধিক বরকত পূর্ণ। (মুসনাদে আহমদ)
রাসুল (সা:) আরোও বলেছেন: বিয়ে অনুষ্ঠানের ব্যাপক প্রচার কর ,তা মসজিদে সম্পাদন করো এবং ব্যাপক একতারা বাদ্য বাজাও। (তিরমিযী)
বিশেষ দ্রষ্টব্য: ইসলাম বিয়ের অনুষ্ঠানে প্রচারের ব্যপারে ছোট বালিকাদের বাদ্য বাজানো এবং গান গাওয়াকে জায়েজ ঘোষণা করেছে।
সামিয়ার বিয়ে সম্পূর্ণ হলো।সামিয়ার শশুর বাড়িতে আজ প্রথম দিন। তাকে তার রুমে রেখে আসলো তার শশুড় বাড়ির আত্মীয় স্বজন ।
নববধুকে ওযু করিয়ে সুসজ্জিতা ও সুরভিতা করে, ভাবিরা এবং অনন্য মহিলা রাও এই দুআ বলবে:
আলাল খাইরি ওয়াল বারাকাতি ওয়া আলাই খাইরি ত্বদির ।
(মঙ্গল ও বরকতের উপর এবং সৌভাগ্যের সাথে তোমার নবজীবনের সূচনা হোক।( বুখারি মুসলিম ১৭৪ পৃ:)
সামিয়া তার নতুন ঘরে বসে আছে।এমন সময় আবু সাঈদ ঘরে প্রবেশ করে সামিয়াকে সালাম জানালো ।

No comments

Powered by Blogger.