বদকারের মৃত্যু

 


✪✪✪✪✪✪ বদকারের মৃত্যু ✪✪✪✪✪

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, বদকারের মৃত্যুর সময় আল্লাহ পাক আজরাঈল (আঃ)-কে বলেন, আমার অমুক দুশমনের নিকট যাও, তার রূহ বের করে আন। আমি দুনিয়াতে তাকে সুখের যাবতীয় জিনিস দান করেছি, তবু সে আমার নাফরমানী করেছে। আজ হতে তার শাস্তি শুরু করব। তখন আজরাঈল (আঃ) ভয়ানক মূর্তিতে ১২ চক্ষু বের করে জাহান্নামের আগুনের তৈয়ারী হাজার হাজার কাটাওয়ালা লোহার গুর্জ হাতে করে ৫ শত জাহান্নামের ফেরেশতাকে সাথে করে হাজির হবে। প্রত্যেকের হাতে আগুনের ফুটানো টক টকে লাল তামার টুকরা ও প্রজ্বলিত আগুনের কোড়া থাকবে। আজরাঈল (আঃ) তার উপর আগুনের কোড়া মারতে থাকবে। অন্যান্য ফেরেশতারাও তার মুখের উপর একত্র হয়ে কোড়া মারতে থাকবে। আজরাঈল (আঃ) হাজার হাজার কাটাওয়ালা ছুরি মুখ দিয়ে চালাইয়া দিবে। আগুনের কাটাসমূহ প্রত্যেক অঙ্গে শিরায় স্নায়ুতে ঢুকে জড়ায়ে পড়বে। রূহকে আঙ্গুলের মাথা হতে টানিয়া পায়ের গোড়ালীতে এনে বন্ধ করে দিয়ে পিটাইতে থাকবে।
তারপর গোড়ালী হতে টেনে হাঁটু পর্যন্ত বন্ধ করে দিবে। আবার পেটের নাড়িভুড়ি পেঁচায়ে এনে সিনার মধ্যে বন্ধ করে দিবে। কলিজা ছিড়িয়া রেজা রেজা হয়ে যাবে। তামাম রগের গোড়া কশে দিবে টান। দুই চক্ষু লেগে যাবে উপরে। পানির জন্য রূহ ডাক দিয়া বলে রূহের ইশারা কেহ বুঝিতে না পায়। ফেরেশতার। তামার টুকরা ও জাহান্নামের অঙ্গারগুলি তার থুতনীর দিকে রাখবে। আজরাঈল (আঃ) বলবে, হে অভিশপ্ত রূহ বের হও এবং জাহান্নামের দিকে চল, বলে চক্ষু লাল করে ধমক মারবে। তখন রূহ শরীর হতে বের হয়ে বলে এরে শরীর। তোর উপর আল্লাহর লানত পড়ুক। তুই অন্যায় কাজে আমাকে নিয়া যাইতি, এবাদতে অলসতা করতি, তুই নিজেও ধ্বংস হয়েছিস, আমাকেও ধ্বংস করেছিস। তারপর রূহ হইতে দুর্গন্ধ বের হবে। আজরাঈল (আঃ) জাহান্নামের ময়লা কাপড় দিয়া পেচাইয়া আসমানের দিকে রওয়ানা হবে। আসমানের ফেরেশতারা ঐ রূহকে দেখে লা'নত করতে করতে আসমানের দরজা বন্ধ করে দিবে। পরে ঐ রূহকে ৭ তবক জমিনের নিচে দোজখের গাড়া সিজ্জিনে রাখা হবে, আর জমিনের ঐ সব অংশগুলো যেখানে যেখানে সে পাপের কাজ করতো তাকে লা'নত করতে থাকবে। ঐদিকে শয়তানের লস্করগুলো দৌড়ায়ে গিয়ে শয়তানকে শুনাবে যে, এক ব্যক্তিকে জাহান্নাম পর্যন্ত পৌঁছায়ে দিয়েছি।
হাসান বসরী (রহঃ) বলেন, যখন কোন ব্যক্তি মরিতে থাকে ঘরের লোকেরা কান্না কাটি করে, তখন আজরাঈল (আঃ) বলেন, আমি তার রিযিক খেয়ে ফেলি নাই, সে নিজেই নিজের রিযিক খেয়ে শেষ করেছে। আমি তার হায়াত কমায়ে দেই নাই, তার নিঃশ্বাস আল্লাহর তরফ হতেই শেষ হয়ে গিয়েছে। আমাকেতো এই ঘরে বার বার আসতে হবে, যতক্ষণ পর্যন্ত এই ঘরের সব লোকের রূহ নেওয়া শেষ না হবে। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, কসম আল্লাহর তখন যদি ঘরের মানুষেরা এই আওয়াজ শুনিত, তবে মুর্দারকে ভুলিয়া নিজের চিন্তায় রোদন করিত। পাপী ব্যক্তি আজরাঈল (আঃ)-কে দেখিয়াই বলতে থাকে, হে ধন-দৌলত, টাকা-পয়সা তোর উপর লা'নত পড়ুক, তোর কারণে আমি মাওলার এবাদত করতে পারি নাই। মাল বলবে আমাকে কেন লা'নত কর, আমার কারণে তুমি বড় বড় লোকের নিকট গিয়া সম্মান পাইতে, নেক লোক দিগকে তুচ্ছ করতে, অন্যায় কাজে আমাকে ব্যয় করতে, আমায় অস্বীকার করার উপায় ছিল না। তুমি যদি আমাকে ভালো কাজে ব্যয় করতে তবে নিশ্চয়ই আজ তোমার কাজে আসতো।
মানুষ যদি জানত যে, মুর্দারের উপর তখন কি দুর্দশা হইতেছে, তবে মুর্দারের জন্য না কেঁদে নিজের জন্য কাঁদতো। মানুষের উপরে যদি তখন মৃত্যুর নেশা ছওয়ার না থাকিত, তবে সে যন্ত্রনার চোটে আশে পাশের লোকদেরকে লাথি মেরে ছিটকায়ে ফেলিত। নিঃশ্বাস যখন গলার কাছে আসে, তখন শয়তান তাকে বেঈমান করে দিবার জন্য চরমভাবে চেষ্টা করে। মৃত্যুর সময় এমন পিপাসা হয়, মনে চায় ৭ টা দরিয়ার পানিও যদি মুখে ঢালিয়া দেয়, তবুও বুঝি পিপাসা যায় না। তখন শয়তান মায়ের ছুরত ধরে পেসাব করে পেয়ালা ভরিয়া বাম পাশে দাঁড়াইয়া বলে, তোমার জন্য পানি এনেছি, তুমি বল আল্লাহ্ দুইজন তাহলে তুমি ভয়ানক বিপদ হইতে বাঁচবে। মুসলমান প্রত্যেক ব্যক্তি ডান দিকে তাকাবে। তার উঠা বসা যদি নেক লোকদের সঙ্গে হয়ে থাকে, বন্ধু বান্ধব যদি নেক্কার হয়, তবে তাকে দেখতে পেয়ে জিজ্ঞাসা করে আমি ঐ পানি খাব কিনা? সে বলে না তুমি ঐ পানি খাইয়ো না। তুমি বলো,
لا حول ولا قوة إلا بالله العلي العظيم
(লা হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিইয়ি্যল আজীম) তখন মুর্দার তাহা পড়িয়া ঈমান নিয়ে মৃত্যু হইবে। আর যদি তার উঠা বসা বদকারের সঙ্গে হয়ে থাকে, তাকে দেখতে পারবে, বলবে আমি ঐ পানি খাব কিনা? সে বলবে, তোমার মা খাইতে বলে খাও। তখন ঐ শয়তানের পেসাব খেয়ে ঈমান হারাইয়া মৃত্যু হইবে। (নাউজুবিল্লাহি) এই জন্য বলে (সৎ সঙ্গ স্বর্গ বাস অসৎ সঙ্গ সর্বনাশ)। নেক্কার লোকদের সঙ্গে ভালবাসা, মোহাব্বত, বন্ধুত্ব রাখলে কিয়ামতের ময়দানেও মস্ত বড় উপকারে আসবে।'
আল্লাহর ভয়ে মহব্বতে কান্দিয়া যে বুক ভাসাইবে,
তাহার চোখের পানি দোজখে পড়িলে,
দোজখের আগুন তখন নিভিয়া যাইবে।
➤সুবহানাল্লাহ ওয়ালহামদুলিল্লাহ ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ আল্লাহু আকবার।
➤সুবহানাল্লাহ ওয়ালহামদুলিল্লাহ ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ আল্লাহু আকবার।
➤সুবহানাল্লাহ ওয়ালহামদুলিল্লাহ ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ আল্লাহু আকবার।
কেমনে থাকিবে মন অন্ধকার কবরে,
দেরী নাই আসে আজরাইল জান কবজ করিতে।
কবরে একেলা মন হামেশা কান্দিলে,
সেই কান্দন কেহ তোমার নাহিকো শুনিবে।
কোন ভরসায় আছো গাফেলও হইয়া,
আল্লাহর দরবারে কিছু লওনা কান্দিয়া।
যে কান্দা কান্দিতে হবে কবরেতে গিয়া,
সেই কান্দা কান্দো সবে নিশি রাত্রে বসিয়া।
যে কান্দা কান্দিতে হবে হাশরেরও মাঠে,
সেই কান্দা কান্দো সবে জিকিরেরও সাথে।
➤হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি'মাল ওয়াকিল,
নি'মাল মাওলা ওয়া নি'মান নাছির।
➤হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি'মাল ওয়াকিল,
নি'মাল মাওলা ওয়া নি'মান নাছির।
➤হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি'মাল ওয়াকিল,
নি'মাল মাওলা ওয়া নি'মান নাছির।
আল্লাহকে হাযির জেনে এস্কেতে আল্লাহর,
কান্দিয়া ভাসাও বুক যিকিরের মাজার।
না কান্দিয়া হাসি খুশী থাকিবে যে জন,
কবরে হাশরে সেই করিবে রোদন।
➤রাদ্বিতু বিল্লাহি রাব্বান, ওয়া বিল ইসলামি দ্বীনান, ওয়া বিমুহাম্মাদিন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা নাবিয়্যান।
➤রাদ্বিতু বিল্লাহি রাব্বান, ওয়া বিল ইসলামি দ্বীনান, ওয়া বিমুহাম্মাদিন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা নাবিয়্যান।
➤রাদ্বিতু বিল্লাহি রাব্বান, ওয়া বিল ইসলামি দ্বীনান, ওয়া বিমুহাম্মাদিন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা নাবিয়্যান।

No comments

Powered by Blogger.