নেক আমল নাজাতের উপায়



*******নেক আমল নাজাতের উপায়******


হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার পরিবারবর্গকে বলেন, হে ফাতেমা, হাসান, হোসাইন। হে আলী! আমার উপরে নির্ভর না করে আমলের উপর নির্ভর কর, খাঁটি আমল তৈরি কর, আমল যদি ভাল হয়, হাশরের দিন আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন নাজাত দিবেন, তোমাদের সাথে আল্লাহ কি ব্যবহার করবেন, তাহা আমি জানি না। আর আমি ইহাও জানি না যে আল্লাহ্ পাক আমার সাথে কি ব্যবহার করবেন। (সুবহানাল্লাহ)

দেখুন মা বোনেরা! যিনি না আসলে সারাজাহান কিছুই সৃষ্টি হইতো না, তার এ ধরনের কথা, আমাদের কি উপায় হবে জানি না? হযরত ফাতেমা (রাঃ) ইন্তেকালের আগে হযরতে আলি (রাঃ)-কে ডেকে বলেন, স্বামী! আমার মউতের সময় এসে গিয়েছে, আমি বিদায় হয়ে যাব দুনিয়া থেকে, আমার অনুরোধ! আমার জানাজা যেন গভীর রাত্রে হয়, বেশি লোকজনকে খবর দিবেন না, অল্প লোক দিয়ে জানাজা দিবেন। যেহেতু আমার মউতের খবর পেলে সাহাবাদের মধ্যে কান্নার রোল পড়ে যাবে, খাটের উপরে লোকেরা লক্ষ্য করে দেখবে, আর মনে মনে ধারণা করবে যে, ফাতেমা এতটুকু লম্বা ছিল পর্দার খেলাফ হয়ে যাবে, তাই গভীর রজনীতে সামান্য কয়েক জন লোক দিয়ে আমার জানাজা দিবেন। আলি (রাঃ) ফাতেমা (রাঃ)-এর ইন্তেকালের পরে কয়েকজন সাহাবীদেরকে খবর দিলেন, তার মধ্যে আবু যর গিফারী (রাঃ) ছিলেন। তিনি কবর তৈয়ার হওয়ার পর, খালি শরীরে কবরের মধ্যে নেমে গড়াগড়ি দিতে লাগলেন, আর বলতে লাগলেন, ওরে কবর তোর মধ্যে কাকে রেখে যাব তুই কি জানিস? তোর ভিতরে রেখে যাব বেহেশতের সব রমণীদের সর্দারিনীকে, খবরদার তুই কোন বেয়াদবী করবি না। কোন জবাব আসে না কবর থেকে। আবার আবু যর (রাঃ) বলেন, হে কবরের মাটি। তুই কি জানিস? তোর মধ্যে কাকে রাখতেছি, তোর ভিতরে রেখে যাচ্ছি যাকে, তিনি হলেন হযরত হাসান-হোসাইনের মা, তারা হবেন বেহেশতের যুবকদের সবদার। হযরত আলীর স্ত্রীকে তোর ভিতরে রেখে যাচ্ছি খবরদার বেয়াদবী করবি না। কোন জবাব আসে না কবর থেকে। এবার আবু যর গিফারী (রাঃ) চিৎকার করে বলেন, হে কবর! কেন তুই উত্তর দিস না। তোর ভিতরে যাকে রেখে যাচ্ছি, তিনি হলেন আখেরী জমানার পয়গম্বর নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কলিজার টুকরা নয়নের মনি, আদরের দুলালি মা ফাতেমাকে রেখে যাচ্ছি। খবরদার কোন বেয়াদবী করবি না। এবার কবর থেকে মানুষের মত আওয়াজ আসল। কবর গম্ভির আওয়াজে ডাক দিয়ে বলে, আমি ফাতেমা চিনি না, বেহেশতের সর্দারিনী আমি চিনি না, হাসান-হোসাইনের মা চিনি না, আলির স্ত্রী চিনি না, রাসূলের কলিজার টুকরা আদরের দুলালি মা ফাতেমা আমি চিনি না, আমি চিনি আমার ভিতরে যদি কেহ আমল ভাল নিয়ে আসতে পারে, আরামে থাকতে পারবে, আমি বেহেশতের সবুজ গালিচা হয়ে যাব। আর আমল যদি খারাপ হয় তাহলে আমার ডান দিকের মাটি পৃথিবীর এক প্রান্তে চলে যাবে, আর বাম দিকের মাটি পৃথিবীর আর এক প্রান্তে চলে যাবে, দুই প্রান্ত হতে এমন জোরে চাপ মারব, যাতে হাড্ডি আর গোশত চুরমার হয়ে মাটির সাথে মিশে যাবে। এভাবে পিষতেই থাকব, হযরত আবু যর গিফারী (রাঃ) কবরের এই আওয়াজ শুনে কবর থেকে চিৎকার মেরে বাহিরে এসে জানাজার নামাজ পড়ে ঘর সংসার ফেলে রোদন করতে করতে আল্লাহর দেওয়ানা হয়ে গেলেন। জীবনে কোন দিন আর তিনি সংসার করতে * পারলেন না।

তাই বলি মা-বোনেরা আমার! আমলের উপরে সব কিছু নির্ভর করবে, আমল ছাড়া কোন উছিলা আপনাকে আমাকে বাঁচাতে পারবে না। তাই আমরা সবাই খাঁটি আমল তৈরি করে কবরবাসী হইব। আল্লাহ পাক বলেন,
 اللَّهُ وَلِيُّ الَّذِيْنَ أَمَنُوا 
(আল্লাহু ওয়ালীয্যুল্লাযীনা আমানু)

"যাহারা আমার ও আমার রাসূলের উপর পূর্ণ ঈমান আনিয়া নেক আমল করিয়াছে, তাহাদের জন্য আমি (দুনিয়াতে, মউতে, কবরে হাশরে, পুলছিরাতে, মিজানে) গার্জিয়ান হইব।" (সূরা বাকারা, আয়াত: ২৫৭)

No comments

Powered by Blogger.