Sunday, August 24, 2025

ইস্তেগফারের পাওয়ার

 ইস্তেগফারের পাওয়ার

ইস্তেগফারের পাওয়ার আপনার জীবনকে, পরিবর্তন করে দিতে পারে। এই ঘটনাটি শুনুন,,,,
ঘটনাটি মক্কার এক শায়েখের। একবার তিনি একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে যান এবং সেখানে তিনি ইস্তেগফারের উপরে একটা লেকচার দেন। লেকচার শেষ হবার পর,সেখানে একজন লোক ভিড় ঠেলে তার কাছে আসে এবং তিনি শায়েখকে ডেকে বলেন আমি আপনাকে কিছু বলতে চাই। শায়েখ যখন তাকে দেখলেন, তাকে দেখেই তার অন্তর প্রশান্ত হয়ে গেল। যদিও তিনি তাকে আগে কখনো দেখেননি বা চিনতেন না। তারপর সেই লোকটি বলল, আমি যা বলব তা আপনি সবার মাঝে ছড়িয়ে দেবেন। যদিও আমি আমার নাম বা ক্ষেতির জন্য করছিনা।লোকটি বললেন আমি প্রতিদিন, অসংখ্যবার ইস্তেগফার পরী।
আলহামদুলিল্লাহ!
এবং এর আশ্চর্য ফলাফলও পেয়েছি। তখন শায়খ অবাক হয়ে গেলেন, এবং অশ্রুসিক্ত চোখে বললেন, হে আমার ভাই,,, তুমিতো জিকির দিয়ে তোমার অন্তরকে সিক্ত করে রেখেছো। তুমি কি আর কোন বিনিময় পেয়েছো? সেই লোক তখন বললেন, আমাকে কখনো দোয়া কবুলের জন্য হাত উঠাতে হয় না। তার আগেই আমার চাওয়া পূরণ করে দেয় আল্লাহ।
সুবহানাল্লাহ!
এটাই হচ্ছে ইস্তেগফারের পাওয়ার।।।
ইস্তেগফার এমন একটি পাওয়ারফুল আমল...
ইস্তেগফার আপনার জীবনকে পরিবর্তন করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।
এই ঘটনাটি তার বাস্তব প্রমাণ!
আপনি যদি ইস্তেগফারকে নিজের জীবনে আবসতো বানিয়ে ফেলেন,তাহলে প্রত্যেকটা সমস্যা আপনি ইস্তেগফার দ্বারা সমাধান করতে পারবেন। আপনি হাত উঠানোর আগেই, আপনার চাওয়া গুলো আল্লাহ তায়ালা পূরণ করে দেবেন আপনি দোয়া করার আগে আপনার দোয়াগুলো কবুল হয়ে যাবে। যদি আপনি ইস্তেগফারের সঙ্গে আঠার মত থাকতে পারেন!! সব সময় ইস্তেগফার পড়তে হবে। অনেকেই বলেন, যে আমি একটা কথা বলেছিলাম চলতে ফিরতে, পড়তে বসতে ইস্তেগফার করবেন। তো অনেকেই বলেন,এভাবে ইস্তেগফার করলে থাকবে না। আসলে বাংলায় কিছু প্রবাদ এমন আছে, যেটা অধিক কথার ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা হয়। আসলে প্রকৃত অর্থ হচ্ছে আপনি সবসময় ইস্তেগফার। যখনই ফ্রী সময় পাবেন। একটা কাজ করছেন কাজ করতে গিয়ে যখন পেয়ে গেছেন, একটু রেস্ট নেবেন তার মাঝে যখন বসবেন তখনই আপনি একটু ইস্তেকফার করে নেবেন। যদি আপনি এধরনের সময় না পান, সারাদিনে শুধু যদি ব্যস্তই থাকেন, তাহলে যখনই আপনি ফ্রি হবেন তখনই আধা ঘন্টা এক ঘন্টা একটু ফ্রী সময়ের একটু ইস্তেগফার করে নিন।। এটা অনেক কাজের হবে।ইস্তেগফার অনেক পাওয়ারফুল আমল। সব আমলের নির্ব

Saturday, July 26, 2025

কিয়ামতের আগে মানুষের মধ্যে যে ৫৬ আচরণের প্রকাশ ঘটবে



 Assalamu alaikum

হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সা. বলেছেন, 'কিয়ামত কায়েম হবে না, যে পর্যন্ত না ইলম ওঠিয়ে নেয়া হবে, অধিক পরিমাণে ভূমিকম্প হবে, সময় সংকুচিত হয়ে আসবে।
ফিতনা প্রকাশ পাবে, হারজ বৃদ্ধি
পাবে। (হারজ অর্থ খুনখারাবী) তোমাদের সম্পদ এত বৃদ্ধি পাবে যে, উপচে পড়বে ।
(বুখারি, শরীফঃ- ৯৭৯)
এ ছাড়াও কিয়ামতের আগে মানুষের
মধ্যে যে ৫৬ আচরণের প্রকাশ ঘটবে।
১. নামাজের প্রতি মানুষের গুরুত্ব
থাকবে না।
২. আমানতের খেয়ানত করবে।
৩. সুদের লেনদের করবে।
৪. মিথ্যা কথা বলাকে হালাল মনে করবে।
৫. সামান্য বিষয়ে অন্যের প্রাণ সংহার করবে।
৬. উচু উচু ভবন নির্মাণ করবে।
৭. আত্মিয়তার সর্ম্পক ছিন্ন করবে।
৮. ইনসাফ উঠে যাবে।
৯. জুলুম অত্যাচার ব্যাপক আকার ধারণ করবে।
১০. তালাক বেড়ে যাবে।
১১. আকস্মিক মৃত্যু বেড়ে যাবে।
১২. সত্যকে মিথ্যা এবং মিথ্যাকে সত্য মনে করা হবে।
১৩. দুর্নীতি পরায়ন মানুষদের সেবক
মনে করা হবে।
১৪. অপবাদ আরোপের পরিমাণ বেড়ে যাবে।
১৫. লোকেরা সন্তান নেয়া বন্ধ করে দিবে।
১৬. নীচ লোকেরা সম্পদশালী হবে।
১৭. ভদ্রলোকেরা নিষ্পষিত, লাঞ্চিত হবে।
১৮. আমানতের খেয়ানত হবে।
১৯. শাসক শ্রেণির লোকেরা অহরহমিথ্যা কথা বলবে।
২০. নেতৃবর্গ জালেম হবে।
২১. আলেম ও কারিগণ বদকার হবে।
২২. স্বর্ণের দামকমে যাবে এবং রুপার দাম বেড়ে যাবে।
২৩. গুনাহের পরিমাণ বেড়ে যাবে।
২৪. জান মালের নিরাপত্তা কমে যাবে।
২৫. শরিয়তের দন্ড বিধি অকার্যকর হবে।
২৬. ব্যাপকভাবে মদ্যপান ছড়িয়ে পড়বে।
২৭. কোরআন শরিফ সঞ্জিত করা হবে।
২৮. দাসি স্বীয় মুনিবকে ভর্ৎসনা দিবে।
২৯. নিচু শ্রেণির লোকেরা দেশের শাসক বনে যাবে।
৩০. নারী-পুরুষ কাধে কাধ মিলিয়ে কাজ করবে।
৩১. পুরুষরা মহিলার বেশ এবং মহিলারা পুরুষের বেশ ধারণ করবে।
৩২. গাইরুল্লাহর নামে শপথ করা হবে।
৩৩. মুসলমানরাও নির্দ্বিধায় মিথ্যা সাক্ষ্য দিবে।
৩৪. সম্মানের রেওয়াজ উঠে যাবে।
৩৫. দুনিয়া লাভের আশায় দ্বীন ইলম
শিক্ষা করা হবে
৩৬. আখেরাতের কাজের দ্বারা দুনিয়া অর্জন করা হবে।
৩৭. জাতীয় ও রাষ্ট্রিয় সম্পদকে নিজের মনে করা হবে।
৩৮. আমানতের মালকে লুটের মাল
মনে করা হবে।
৩৯.সমাজের নিচ ও নিকৃষ্ট লোককে নেতা বানানো হবে।
৪০.সন্তান পিতা-মাতার অবাধ্য হবে।
৪১. বন্ধু বন্ধুর ক্ষতি করবে।

Friday, June 6, 2025

অতিরিক্ত কষ্টে দুঃখে মধ্যে থাকলে আপনি কি করবেন ?

 

অতিরিক্ত কষ্টে দুঃখে মধ্যে থাকলে আল্লাহ তায়ালা কি করতে বলেছেন?

অতিশয় কষ্ট, দুঃখ ও বিপদের মধ্যে একজন মুসলমান কীভাবে আচরণ করবে, এ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা কুরআন ও হাদীসের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। নিচে সংক্ষেপে তা তুলে ধরা হলো:


🌧 যখন আপনি দুঃখ-কষ্টে থাকেন, তখন আল্লাহ কী করতে বলেছেন:

1. সবর (ধৈর্য) ধারণ করা

"নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন।"
📖 [সূরা বাকারা – 2:153]

আল্লাহ তাআলা ধৈর্যধারণকে বিশেষভাবে ভালোবাসেন। কষ্টের সময় উত্তেজিত বা হাল ছেড়ে না দিয়ে ধৈর্য ও দৃঢ়তা রাখাই ঈমানদারের পরিচয়।


2. আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করা – নামাজ ও দোয়ার মাধ্যমে

"তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য চাও।"
📖 [সূরা বাকারা – 2:45]

নামাজে দাঁড়িয়ে আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি ও দোয়া করা – এটা একজন মুসলমানের শক্তিশালী অস্ত্র।


3. আল্লাহর জিকির করা ও তাওয়াক্কুল রাখা

"নিঃসন্দেহে আল্লাহর জিকিরে হৃদয় প্রশান্ত হয়।"
📖 [সূরা রা'দ – 13:28]

"যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর ভরসা করে, তিনিই তার জন্য যথেষ্ট।"
📖 [সূরা তালাক – 65:3]


4. নিজেকে পরীক্ষা মনে করা ও আল্লাহর রহমতের আশা রাখা

"আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা ও ধন-সম্পদ, প্রাণ ও ফল-ফসলের ঘাটতির মাধ্যমে। আর ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও।"
📖 [সূরা বাকারা – 2:155]


5. নিজের গুনাহের জন্য ক্ষমা চাওয়া ও তওবা করা

কষ্ট কখনো কখনো আমাদের গুনাহের কাফফারা হয়ে আসে। তাই নিজের ভুলের জন্য ক্ষমা চাওয়া উচিত।


❤️ ছোট কিছু আমল যা দুঃখে-কষ্টে শান্তি দিতে পারে:

  • ❖ "يا حيّ يا قيّوم، برحمتك أستغيث" (হে চিরঞ্জীব ও চিরস্থায়ী! তোমার রহমতের জন্য তোমার সাহায্য প্রার্থনা করছি)

  • ❖ সূরা দুহা ও সূরা ইনশিরাহ পড়া

  • ❖ ইস্তিগফার (আস্তাগফিরুল্লাহ) বেশি বেশি বলা

  • ❖ “حسبي الله ونعم الوكيل” বলা (আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, তিনি কত উত্তম সাহায্যকারী)


🕊 মনে রাখবেন:

আল্লাহ কখনো বান্দার ধৈর্য বৃথা যেতে দেন না। কষ্টের পর নিশ্চয়ই সুদিন আসে।

"নিশ্চয়ই কষ্টের সাথে রয়েছে স্বস্তি।"
📖 [সূরা ইনশিরাহ – 94:6]

Thursday, June 5, 2025

কুরবানী কি

 

🐂 কুরবানী কি..?

****************************************

🐂 কুরবানী (قربانی) ইসলামে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত যা ঈদুল আযহার সময় আদায় করা হয়। এটি মূলত আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট পশু জবেহ করার মাধ্যমে তাঁর নিকটত্ব অর্জনের একটি মাধ্যম

📖 কুরবানীর মূল তাৎপর্য:

কুরবানী শব্দটি এসেছে আরবি "কুরব" (قرب) থেকে, যার অর্থ নিকটবর্তী হওয়া বা সান্নিধ্য লাভ করা। মুসলমানরা এই ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভের চেষ্টা করেন।

🐑 ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গিতে কুরবানীর গুরুত্ব:

কুরবানীর প্রথাটি হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এর সময় থেকে শুরু হয়েছে। তিনি আল্লাহর আদেশে তাঁর প্রিয় পুত্র হযরত ইসমাইল (আঃ)-কে কুরবানী দিতে প্রস্তুত হয়েছিলেন। আল্লাহ তা'আলা তাঁর এই নিঃস্বার্থ আত্মত্যাগ ও আনুগত্যকে কবুল করে তাঁর স্থলে একটি দুম্বা প্রেরণ করেন।

📆 কবে কুরবানী করা হয়?

  • প্রতি বছর ইসলামি জিলহজ মাসের ১০, ১১ ও ১২ তারিখে কুরবানী করা হয় (ঈদুল আযহার দিন এবং পরের দুই দিন)।

🐃 কুরবানীর পশু হতে পারে:

  • গরু (🐂)

  • ছাগল / ভেড়া (🐐)

  • উট (🐫)

🧕 কারা কুরবানী করবে?

  • প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিম, যারা নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক (যাকাত দিতে হয় যাদের) — তাদের জন্য কুরবানী করা ওয়াজিব বা ফরজের নিকটবর্তী।

🎯 কুরবানীর উদ্দেশ্য:

  • আল্লাহর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ

  • আত্মত্যাগের শিক্ষা

  • ধনী ও গরিবের মাঝে ভ্রাতৃত্ববোধ তৈরি

Sunday, June 1, 2025

যিলহজ মাসের প্রথম দশদিনের ফযীলত

 


✅ যিলহজ মাসের প্রথম দশদিনের ফযীলত

যিলহজ মাসের প্রথম দশদিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কুরআনে কারীমে সূরা ফজর-এ আল্লাহ তাআলা যিলহজ মাসের দশরাত্রির কসম করে ইরশাদ করেন:
وَالْفَجْرِ وَلَيَالٍ عَشْرٍ “শপথ ফজরের ও শপথ দশরাত্রির।"
এর দ্বারা যিলহজ মাসের প্রথম দশদিনের ফযীলত বুঝিয়েছেন। রাসূলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেন:
"আল্লাহ তাআলার নিকট যিলহজ মাসের প্রথম দশদিনের ইবাদত অপেক্ষা অধিক পছন্দনীয় আর কোন ইবাদত নেই। এর প্রতিদিনের রোযা এক বছরের রমাযানের সমতুল্য। আর প্রত্যেক রাতের ইবাদত লাইলাতুল কদরের ইবাদতের সমতুল্য। বিশেষভাবে ৯ তারিখ আরাফার রোযা। আমি আল্লাহ তাআলার দরবারে আশা রাখি, আরাফার দিবসে রোযা রাখলে তিনি পূর্ববর্তী ও পরবর্তী বছরের গুনাহ মাফ করে দেবেন।"
(سنن الترمذى، الصوم ماجاء في العمل في أيام العشر، ١٥٨/١ رقم : ٧٥٨)
উক্ত আয়াত ও হাদীছের আলোকে আমাদের করণীয় হলো, এ যিলহজ মাসের প্রথম দশদিন যথাসাধ্য নফল রোযা রাখা এবং রাত জেগে ইবাদত-বন্দেগী করা। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে এ মহান মাসের হক অনুযায়ী আমল করার তাওফীক দান করুন। আমীন!
যিকরের নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ বলেন:
وَاذْكُرُوا اللَّهَ فِي أَيَّامٍ مَعْدُودَاتٍ فَمَنْ تَعَجَّلَ فِي يَوْمَيْنِ فَلا إِثْمَ عَلَيْهِ وَمَنْ تَأَخَّرَ فَلَا إِثْمَ عَلَيْهِ لِمَنِ اتَّقَى *
"তোমরা নির্দিষ্ট সংখ্যক দিনগুলিতে আল্লাহর যিকির করবে। যদি কেউ তাড়াতাড়ি করে দুদিনে চলে আসে তবে তার কোনো পাপ নেই, আর যদি কেউ বিলম্ব করে তবে তারও কোনো পাপ নেই, এ তার জন্য যে তাকওয়া অবলম্বন করে।'
এ নির্দেশের ভিত্তিতে হাজীগণ ৯ তারিখে আরাফার মাঠে, ১০ তারিখে মুযদালিফা ও মিনার মাঠে হজ্জের আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে আল্লাহর যিক্র সম্পন্ন করার পর ১১, ১২, ও ১৩ অথবা ১১ ও ১২ই যুলহাজ্জ মিনার প্রান্তরে অবস্থান করে আল্লাহ যিক্র করেন। আর যারা হজ্জে যান না অর্থাৎ সারা বিশ্বের সকল মুসলিম এ আয়াতের নির্দেশ অনুসারে যুলহাজ্জ মাসের ৯ তারিখ আরাফার দিবস থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত প্রত্যেক সালাতের পরে আল্লাহর যিক্র করেন। আল্লাহর যিক্র অর্থ ইচ্ছামত আল্লার নাম জপ করা নয়। বরং যেখানে যেভাবে যিকর করতে রাসুলুল্লাহ শিক্ষা দিয়েছেন সেভাবে যিকর করা। সুন্নাতের শিক্ষা অনুসারে এ ২৩ ওয়াক্ত সালাতের শেষে "আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ। ওয়া আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হামদ" বাক্য একবার সশব্দে বলতে হবে।
🔰 তাকবীরে তাশরীক্ব-এর ইতিহাস
আরও একটি জরুরী বিষয় হচ্ছে, তাকবীরে তাশরীক্ব। তাকবীরে তাশরীকু বলা হয় ঐ তাকবীরকে যা আইয়্যামে তাশরীকু অর্থাৎ, ৯ই যিলহজ ফজর থেকে ১৩ই যিলহজ আছর পর্যন্ত ২৩ ওয়াক্ত ফরয নামায এবং ঈদের নামায ধরলে মোট ২৪ ওয়াক্ত ফরয নামাযের সালাম ফিরানোর পর সাথে সাথে ইমাম, মুক্তাদি, মুকীম, মুসাফির, মুনফারিদ, গ্রামবাসী শহরবাসী সকলের উপর একবার উচুস্বরে-
اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ وَلِلَّهِ الْحَمْدُ
এই তাকবীর বলা ওয়াজিব। মহিলাদের জন্যও একবার আস্তে, নিচু স্বরে পাঠ করা ওয়াজিব। যদি কেউ কোন ওয়াক্তে ভুলে যায়, তা হলে এর কাযা নেই। তবে এজন্য অনুতপ্ত হবে এবং সামনে না ছুটে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি 'রাখবে।
এই তাকবীরে তাশরীকু আল্লাহ'র তিনজন সম্মানিত ও নৈকট্যপ্রাপ্ত নবী, রাসূল ও ফেরেশতার মুখনিঃসৃত বাণী। হযরত ইবরাহীম আ. যখন সজোরে সুতীক্ষ্ণ ছুরি হযরত ইসমা'ঈল আ.-এর গলায় চালানো শুরু করলেন, এমন সময় হযরত জিবরাঈল আ. আসমান থেকে দুম্বা নিয়ে সেখানে হাজির হয়ে এ ভয়াবহ
দৃশ্য দেখে বলে উঠলেন: اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ
হযরত ইবরাহীম আ. যখন আসমানী কুরবানী দেখলেন, তখন তিনি বলে
لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ :
এদিকে হযরত ইসমা'ঈল আ. যখন ঘটনা উপলব্ধি করতে পারলেন তখন
وَاللَّهُ أَكْبَرُ وَلِلَّهِ الْحَمْدُ :
অর্থাৎ, এর মাধ্যমে আমাদের শিক্ষা দেয়া হলো যে, বিপদে-আপদে, আনন্দে ও খুশীতে সর্বাবস্থায় আল্লাহ'র বড়ত্ব বর্ণনা করা আর নিজের সবকিছুকে আল্লাহ'র নিকট সোপর্দ করা উচিত।

Saturday, May 31, 2025

কুরবানি করা:কুরবানি কাকে বলে?

৯. কুরবানি করা:


কুরবানি কাকে বলে?


কুরবানি বলা হয় ঈদুল আজহার দিনগুলোতে নির্দিষ্ট প্রকারের গৃহপালিত পশু আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের লক্ষে যবেহ করা।

ইসলামি শরিয়তে এটি ইবাদত হিসেবে সিদ্ধ, যা কোরআন, হাদিস ও মুসলিম উম্মাহর ঐক্যমত্য দ্বারা প্রমাণিত। কোরআন মজীদে যেমন এসেছে:—

﴿ فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَٱنۡحَرۡ ٢ ﴾ [الكوثر: ٢]

‘তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে সালাত আদায় কর ও (পশু) নাহর (কুরবানি) কর।’[12]

﴿ قُلۡ إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحۡيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ ٱلۡعَٰلَمِينَ ١٦٢ لَا شَرِيكَ لَهُۥۖ وَبِذَٰلِكَ أُمِرۡتُ وَأَنَا۠ أَوَّلُ ٱلۡمُسۡلِمِينَ ١٦٣ ﴾ [الانعام: ١٦٢، ١٦٣]

‘বল, আমার সালাত, আমার কুরবানি, আমার জীবন ও আমার মরণ জগৎসমূহের প্রতিপালক আল্লাহরই উদ্দেশ্যে। তার কোনো শরিক নাই এবং আমি এর জন্য আদিষ্ট হয়েছি এবং আমিই প্রথম মুসলিম।’[13]

হাদিসে এসেছে:—

عن البراء بن عازب رضى الله عنه أن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «من ذبح بعد الصلاة، فقد تم نسكه، وأصاب سنة المسلمين ». [روه البخاري ومسلم]

বারা ইবনে আযিব রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যে ঈদের সালাতের পর কুরবানির পশু যবেহ করল তার কুরবানি পরিপূর্ণ হল ও সে মুসলিমদের আদর্শ সঠিকভাবে পালন করল।[14]

عن أنس بن مالك -رضي الله عنه- قال: ضحى النبي صلى الله عليه وسلم بكبشين أملحين، ذبحهما بيده، وسمى وكبر، ووضع رجله على صفاحهما [رواه البخاري ومسلم] وفي لفظ البخاري أقرنين قبل أملحين.

আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ হাতে দুটি সাদা কালো বর্ণের দুম্বা কুরবানি করেছেন। তিনি বিসমিল্লাহ ও আল্লাহু আকবর বলেছেন। তিনি পা দিয়ে দুটো কাঁধের পাশ চেপে রাখেন।[15] তবে বুখারিতে ‘সাদা-কালো’ শব্দের পূর্বে ‘শিং ওয়ালা’ কথাটি উল্লেখ আছে।

Saturday, May 24, 2025

কিভাবে মৃত্যু হল আল্লাহর তরবারি খালিদের



কিভাবে মৃত্যু হল আল্লাহর তরবারি খালিদের 


মৃত্যুশয্যায় মহাবীর সাহাবী খালিদ বিন ওয়ালিদ। দূর্বল কন্ঠে তাঁর স্ত্রীকে বিছানায় পাশে বসতে বললেন। খুব প্রয়োজনীয় একটি প্রশ্নের উত্তর জানা যে বাকি রয়ে গেছে! 

এই সেই মহাবীর খালিদ, যিনি সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সেনা প্রধান। যার নেতৃত্বে মুসলিম বাহিনী ১০০ টিরও বেশি যুদ্ধে অংশ নিয়েছে এবং কোনোটাতেই পরাজয় বরণ করেনি। তার রণকৌশল আজও বিভিন্ন দেশের সেনাবাহিনীতে প্রশিক্ষণের সময় পাঠ্য হিসাবে শিখানো হয়! তাঁর নামে এখনো বিভিন্ন দেশে অনেক ব্রিগেড, যুদ্ধবিমান ও নৌযানের নামকরণ করা হয়। 
এই সেই খালিদ বিন ওয়ালিদ যাকে স্বয়ং হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) 'সাইফুল্লাহ' উপাধি দিয়েছিলেন, যার মানে আল্লাহর তরবারি। 

এই সেই খালিদ যিনি মুসলিম বাহিনীর সেনাপ্রধান হিসেবে তুখোড় বিজয়ী আর ক্যারিয়ারের তুঙ্গে থাকা অবস্থায় তৎকালীন খলিফা উমর ইবনুল খাত্তাবের নির্দেশে বিনা বাক্য ব্যয়ে সেনাপ্রধানের পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে সাধারণ সৈনিক হিসেবে লড়াই করা শুরু করেন। 
নেতার নেতৃত্ব মানতে হবে, এতো ইসলামে ভীষণ জোড় দিয়ে বলা। নেতার নির্দেশের প্রতি আনুগত্য একজন সত্যিকার বীরের মহত্ব। 

সেই খালিদ আজ মৃত্য শয্যায়। নিস্তেজ হয়ে শুয়ে আছেন। বিছানায় শুয়েই তার প্রাণপ্রিয় স্ত্রীকে খালিদ বললেন- 'প্রিয়তমা স্ত্রী, আমি বেশিক্ষণ বাঁচবো বলে মনে হচ্ছে না। একটা আফসোস এই বিদায় বেলায় ভীষণ কষ্ট দিচ্ছে, তুমি কি এর উত্তর দিতে পারো'? খালিদের স্ত্রী বিনয়ের সাথে জিজ্ঞাসা করলেন- 'কি প্রশ্ন আপনার মনে? আমাকে বলুন। দেখি আমি এর উত্তর দিতে পারি কী না’। ৫৭ বছরের খালিদ বললেন- 'তুমি আমার সারাটা শরীর পরীক্ষা করে দেখো, এমন কোনো স্থান কি আমার শরীরে আছে যেখানে শত্রুর তরবারীর আঘাত নেই'? 

একজন স্বামীকে তো স্ত্রী ভালো করেই জানেন, চেনেন। তবুও দীর্ঘক্ষণ পরীক্ষা করে স্ত্রী উত্তর দিলেন- 'না, আল্লাহর রাস্তায় আপনি এতো বেশি যুদ্ধ করেছেন যে শত্রুর আঘাত আপনার সারাটা শরীরেই আছে'। 

খালিদ বিন ওয়ালিদ তখন দুঃখ নিয়ে বললেন- 'আল্লাহর কসম, প্রতিটা জিহাদে আমার নিয়ত থাকতো যেনো আমি ময়দানে শত্রুর আঘাতে মারা যাই, তাতে যেনো শহীদের মর্যাদা পাই। কিন্তু আফসোস, দেখো আজ যুদ্ধের ময়দানে মৃত্যু না হয়ে আমার মৃত্যু হচ্ছে আমারই বিছানায়! আমায় কি আল্লাহ শহীদদের মাঝে রাখতে চান না'? 

স্বামীর আফসোস দেখে স্ত্রী কিছুক্ষণ চুপ রইলেন। এরপর করলেন সেই বিখ্যাত উক্তি- 'আপনার নাম স্বয়ং রাসূল (সাঃ) রেখেছিলেন ‘সাইফুল্লাহ’, আল্লাহর তরবারী। এমন কোনো তরবারী কি দুনিয়ায় আছে যেটা আল্লাহর তরবারীর মোকাবেলা করতে পারে? তাইতো ময়দানে আপনার মৃত্যু হয়নি। কারণ আল্লাহ তাঁর তরবারী মাটিতে লুটিয়ে যেতে দেননি'। 

ভীষণ খুশি হলেন খালিদ বিন ওয়ালিদ। বুঝতে পারলেন আল্লাহর ইচ্ছা এবং এতো জিহাদ করার পরেও আজো কেন তিনি বেঁচে আছেন। তার অন্তরে তখন একটা তৃপ্তির বাতাস বইতে শুরু করলো। সেই বাতাসে ভেসেই এর কিছুক্ষণ পরে শান্তিতে বেহেস্তের রাস্তায় চলে গেলেন মহাবীর খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ)।

আমরা অনেকেই সম্রাট জুলিয়াস সিজারের গুনগান করি, আলেকজান্ডারের ঘটনা মন দিয়ে শুনি, নেপোলিয়ানকে শ্রেষ্ঠ বলি। অথচ আমরা খালিদ বিন ওয়ালিদকে চিনিনা। জেনারেল খালিদ বিন ওয়ালিদের নেতৃত্বগুণ, বীরত্ব আর রণকৌশলের সামনে অন্য যেকোনো সেনানায়কই তুচ্ছ। 

আল্লাহ আমাদেরকে মহাবীর খালিদের মতো তার দ্বীনের একজন সৈনিক হিসেবে কবুল করেন, আমীন

Tuesday, May 20, 2025

যখনই বিপদে পড়বেন তিনটি কাজ অবশ্যই করবেন

যখনই বিপদে পড়বেন তিনটি কাজ অবশ্যই করবেন। 
.
১. সাদাক্বাহ (দান):  রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেনঃ তোমরা সদকা কর এবং সদকা দ্বারা রোগীর রোগ চিকিৎসা কর। কেননা, সদকা রোগ এবং বালা-মুসিবত দূর করে এবং আয়ু ও নেকী বৃদ্ধি করে। -বায়হাকী।

২. ইস্তিগফার (হাদিসসম্মত উপায়ে আল্লাহর নিকট গোনাহ্ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা। এটি জপতে পারেন: "রাব্বিগফিরলি", "আসতাগফিরুল্লাহা ওয়া আতূবু ইলাইহি") 

‘যে ব্যক্তি সর্বদা ইস্তিগফার করতে থাকে, আল্লাহ তাআলা তাকে সংকট থেকে মুক্তির পথ করে দেন। যাবতীয় দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি ও প্রশান্তি দান করেন এবং তাকে তার ধারণাতীত জায়গা থেকে রিজিক দান করেন।’ (আবুদাউদ: ১৫১৮)।

৩. দরুদ পাঠ (হাদিসসম্মত হলে উত্তম। "আল্লাহুম্মা সল্লি ওয়া সাল্লিম আলা নাবিয়্যিনা মুহাম্মাদ" পাঠ করে সংক্ষেপে দরুদ পড়তে পারেন)

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এক সাহাবি নবীজিকে বলেন, 'আমার পুরো দু'আই আপনার প্রতি দরুদের জন্য নির্ধারিত করে দেব।' তখন নবীজি বলেন, "তাহলে তোমার (সকল) ইচ্ছা/অভিপ্রায় পূরণের জন্য এটাই যথেষ্ট হবে এবং তোমার গোনাহ্ ক্ষমা করা হবে।" [তিরমিযি: ২৪৫৭, মুসতাদরাক: ২/৪২১ (সহিহ)]
.
এগুলো খুব দ্রুত উপকার পৌঁছায়। হাদিস দ্বারাও এসব আমল প্রমাণিত। সাথে হাদিসসম্মত উপায়ে দু'আ তো করবেনই।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাওফীক দান করুক।
আমীন

Sunday, May 18, 2025

কি এই সান্ডা? এটি খাওয়া কি হালাল ?


কি এই সান্ডা? এটি খাওয়া কি হালাল ?

সহিহ বুখারি ও মুসলিমে বর্ণিত, একবার রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে সান্ডা পরিবেশন করা হয়। তিনি তা খাননি। সাহাবারা জানতে চাইলেন- "ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি কি একে অপছন্দ করেন, নাকি এটি হারাম?" তিনি বললেন, "এটি আমার কওমের খাদ্য নয়, তাই আমি খাই না।" (সহিহ বুখারি: ৫৫৩৭, সহিহ মুসলিম: ১৯৪৪)।
 এরপর সাহাবাগণ তার সামনেই তা খেয়ে নেন, এবং তিনি এতে কোনো নিষেধ দেননি।

⚖️ মাজহাবভিত্তিক মতামত

হানাফি মাজহাব: সান্ডা খাওয়াকে মাকরুহে তাহরিমি (অত্যন্ত অপছন্দনীয়) হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যদিও এটি স্পষ্টভাবে হারাম নয়।

মালিকি, শাফেয়ি ও হাম্বলি মাজহাব: এই মাজহাবগুলোর অধিকাংশ আলেম সান্ডা খাওয়াকে হালাল মনে করেন।  

🦎 সান্ডা বনাম গুইসাপ

অনেকে সান্ডা ও গুইসাপকে একই প্রাণী মনে করেন, তবে এদের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে:

সান্ডা: মরুভূমিতে বসবাসকারী নিরামিষভোজী সরীসৃপ।

গুইসাপ: দক্ষিণ এশিয়ায় পাওয়া যায়, মাংসাশী ও উভচর প্রাণী। 

সান্ডা সাধারণত মরুভূমি অঞ্চলে পাওয়া যায় এবং এটি বংশবিস্তার করে ডিমের মাধ্যমে। প্রাপ্তবয়স্ক সাণ্ডার দৈর্ঘ্য প্রায় ৮৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হতে পারে। এটি সাধারণত গাছের লতাপাতা, ঘাস ও শস্য খায়।মরুভূমির প্রাকৃতিক পরিবেশে বেঁচে থাকে।, যা সাণ্ডা নামক প্রাণীকে অন্যান্য সরীসৃপ জাতীয় প্রাণী থেকে আলাদা করে তোলে।

Friday, May 16, 2025

সুরা আল-আরাফ আয়াতঃ ১০ থেকে ২৭ (বাংলা উচ্চারণ সহ অর্থ)



সুরা আল-আরাফ আয়াতঃ ১০ থেকে ২৭ (বাংলা উচ্চারণ সহ অর্থ) 
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ 
 বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম 
 পরম করুণাময় অতি দয়ালু আল্লাহর নামে (শুরু করছি)।

وَلَقَدْ مَكَّنَّاكُمْ فِي الْأَرْضِ وَجَعَلْنَا لَكُمْ فِيهَا مَعَايِشَ قَلِيلًا مَا تَشْكُرُونَ10 
 ১০। অলাক্বাদ্ মাক্কান্না-কুম্ ফিল্ র্আদ্বি অজ্বা‘আল্না-লাকুম্ ফীহা-মা‘আ-য়িশ্; ক্বালীলাম্ মা-তাশ্কুরূন্। 
১০ আর আমি তো তোমাদেরকে যমীনে আবাসনের ব্যবস্থা করে দিয়েছি এবং তোমাদের জন্য তাতে রেখেছি জীবনোপকরণ। তোমরা অল্পই কৃতজ্ঞ হও।

 وَلَقَدْ خَلَقْنَاكُمْ ثُمَّ صَوَّرْنَاكُمْ ثُمَّ قُلْنَا لِلْمَلَائِكَةِ اسْجُدُوا ثُمَّ قُلْنَا لِلْمَلَائِكَةِ اسْجُدُوا لِآدَمَ فَسَجَدُوا إِلَّا إِبْلِيسَ لَمْ يَكُنْ مِنَ السَّاجِدِينَ11
 ১১। অলাক্বাদ্ খালাকনা-কুম্ ছুম্মা ছোয়াওর্য়্যানা-কুম্ ছুম্মা কুল্না-লিল্মালা - য়িকাতিস্ জুদূ লিআ-দামা ফাসাজ্বাদূ য় ইল্লা য় ইব্লীস্; লাম্ ইয়াকুম্ মিনাস্ সা-জ্বিদীন্। 
১১ আর অবশ্যই আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি। তারপর তোমাদের আকৃতি দিয়েছি। তারপর ফেরেশতাদেরকে বলেছি, ‘তোমরা আদমকে সিজদা কর’। অতঃপর তারা সিজদা করেছে, ইবলীস ছাড়া। সে সিজদাকারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না।

 قَالَ مَا مَنَعَكَ أَلَّا تَسْجُدَ إِذْ أَمَرْتُكَ قَالَ أَنَا خَيْرٌ مِنْهُ خَلَقْتَنِي مِنْ نَارٍ وَخَلَقْتَهُ مِنْ طِينٍ12 
১২। ক্বা-লা মা-মানা‘আকা আল্লা-তাস্জুদা ইয্ আর্মাতুক্; ক্বা-লা আনা-খাইরুম্ মিন্হু খালাক্বতানী মিন্ না-রিওঁ অখলাকতাহূ মিন্ ত্বীন্। 
১২ তিনি বললেন, ‘কিসে তোমাকে বাধা দিয়েছে যে, সিজদা করছ না, যখন আমি তোমাকে নির্দেশ দিয়েছি’? সে বলল, ‘আমি তার চেয়ে উত্তম। আপনি আমাকে আগুন থেকে সৃষ্টি করেছেন, আর তাকে সৃষ্টি করেছেন কাদামাটি থেকে’।

 قَالَ فَاهْبِطْ مِنْهَا فَمَا يَكُونُ لَكَ أَنْ تَتَكَبَّرَ فِيهَا فَاخْرُجْ إِنَّكَ مِنَ الصَّاغِرِينَ13 
১৩। ক্বা-লা ফাহ্বিত্ব মিন্হা-ফামা-ইয়াকূনু লাকা আন্ তাতাকাব্বারা ফীহা-ফাখ্রুজ ইন্নাকা মিনাছ্ ছোয়া-গিরীন্। 
১৩ তিনি বললেন, ‘সুতরাং তুমি এখান থেকে নেমে যাও। তোমার এ অধিকার নেই যে, এখানে তুমি অহঙ্কার করবে। সুতরাং বের হও। নিশ্চয় তুমি লাঞ্ছিতদের অন্তর্ভুক্ত’। 

قَالَ أَنْظِرْنِي إِلَى يَوْمِ يُبْعَثُونَ14
 ১৪। ক্বা-লা আর্ন্জিনী য় ইলা-ইয়াওমি ইয়ুব্‘আছূন্। 
১৪ সে বলল, ‘সেদিন পর্যন্ত আমাকে অবকাশ দিন, যেদিন তাদেরকে পুনরুজ্জীবিত করা হবে’।

 قَالَ إِنَّكَ مِنَ الْمُنْظَرِينَ15
 ১৫। ক্বা-লা ইন্নাকা মিনাল্ মুন্জোয়ারীন্। 
১৫ তিনি বললেন, ‘নিশ্চয় তুমি অবকাশপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত’।
 قَالَ فَبِمَا أَغْوَيْتَنِي لَأَقْعُدَنَّ لَهُمْ صِرَاطَكَ الْمُسْتَقِيمَ 16 
১৬। ক্বা-লা ফাবিমা য় আগ্ওয়াইতানী লাআক‘উদান্না লাহুম্ ছিরা-ত্বোয়াকাল্ মুস্তাক্বীম্। 
১৬ সে বলল, ‘আপনি আমাকে পথভ্রষ্ট করেছেন, সে কারণে অবশ্যই আমি তাদের জন্য আপনার সোজা পথে বসে থাকব।

 ثُمَّ لَآتِيَنَّهُمْ مِنْ بَيْنِ أَيْدِيهِمْ وَمِنْ خَلْفِهِمْ وَعَنْ أَيْمَانِهِمْ وَعَنْ شَمَائِلِهِمْ وَلَا تَجِدُ أَكْثَرَهُمْ شَاكِرِينَ17
 ১৭। ছুম্মা লাআ-তিয়ান্নাহুম্ মিম্ বাইনি আইদীহিম্ অমিন্ খাল্ফিহিম্ অ‘আন্ আইমা-নিহিম্ অ আন্ শামা - য়িলিহিম্; অলা-তাজ্বিদু আক্ছারাহুম্ শা-কিরীন্। 
১৭ ‘তারপর অবশ্যই তাদের নিকট উপস্থিত হব, তাদের সামনে থেকে ও তাদের পেছন থেকে এবং তাদের ডান দিক থেকে ও তাদের বাম দিক থেকে। আর আপনি তাদের অধিকাংশকে কৃতজ্ঞ পাবেন না’। 

قَالَ اخْرُجْ مِنْهَا مَذْءُومًا مَدْحُورًا لَمَنْ تَبِعَكَ مِنْهُمْ لَأَمْلَأَنَّ جَهَنَّمَ مِنْكُمْ أَجْمَعِينَ18
 ১৮। ক্বা-লাখ্ রুজ মিন্হা- মায্ঊমাম্ মাদ্হূরা-; লামান্ তাবি‘আকা মিন্হুম্ লাআম্লায়ান্না জ্বাহান্নামা মিন্কুম্ আজমা‘ঈন্।
 ১৮ তিনি বললেন, ‘তুমি এখান থেকে বের হও লাঞ্ছিত বিতাড়িত অবস্থায়। অবশ্যই তাদের মধ্য থেকে যে তোমার অনুসরণ করবে, আমি তোমাদের সবাইকে দিয়ে জাহান্নাম ভরে দেবই’।

 وَيَا آدَمُ اسْكُنْ أَنْتَ وَزَوْجُكَ الْجَنَّةَ فَكُلَا مِنْ حَيْثُ شِئْتُمَا وَلَا تَقْرَبَا هَذِهِ الشَّجَرَةَ فَتَكُونَا مِنَ الظَّالِمِينَ19
 ১৯। অ ইয়া য় আ-দামুস্কুন্ আন্তা অযাওজুকাল্ জ্বান্নাতা ফাকুলা-মিন্ হাইছূ শিতুমা অলা-তাকরবা- হা-যিহিশ্ শাজ্বারাতা ফাতাকূনা-মিনাজ্জোয়া-লিমীন্ 
১৯ ‘আর হে আদম, তুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে বাস কর। অতঃপর তোমরা আহার কর যেখান থেকে চাও এবং এই গাছটির নিকটবর্তী হয়ো না। তাহলে তোমরা উভয়ে যালিমদের অন্তর্ভুক্ত হবে’। 

فَوَسْوَسَ لَهُمَا الشَّيْطَانُ لِيُبْدِيَ لَهُمَا مَا وُورِيَ عَنْهُمَا مِنْ سَوْآتِهِمَا وَقَالَ وَقَالَ مَا نَهَاكُمَا رَبُّكُمَا عَنْ هَذِهِ الشَّجَرَةِ إِلَّا أَنْ تَكُونَا مَلَكَيْنِ أَوْ تَكُونَا مِنَ الْخَالِدِينَ20
 ২০। ফাঅস্অসা লাহুমাশ্ শাইত্বোয়া-নু লিইয়ুব্দিয়া লাহুমা- মা-ঊরিয়া ‘আন্ হুমা- মিন্ সাওআ-তিহিমা-অক্বা-লা মা- নাহা-কুমা- রব্বুকুমা-‘আন্ হা-যিহিশ্ শাজ্বারতি ইল্লা য় আন্ তাকূনা- মালাকাইনি আও তাকূনা-মিনাল্ খা-লিদীন্। 
২০ অতঃপর শয়তান তাদেরকে প্ররোচনা দিল, যাতে সে তাদের জন্য প্রকাশ করে দেয় তাদের লজ্জাস্থান, যা তাদের থেকে গোপন করা হয়েছিল এবং সে বলল, ‘তোমাদের রব তোমাদেরকে কেবল এ জন্য এ গাছ থেকে নিষেধ করেছেন যে, খেলে তোমরা ফেরেশতা হয়ে যাবে অথবা তোমরা চিরস্থায়ীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে’। 

وَقَاسَمَهُمَا إِنِّي لَكُمَا لَمِنَ النَّاصِحِينَ21 
২১। অক্বা-সামাহুমা য় ইন্নী লাকুমা- লামিনান্ না-ছিহীন্।
 ২১ আর সে তাদের নিকট শপথ করল যে, ‘নিশ্চয় আমি তোমাদের উভয়ের জন্য কল্যাণকামীদের একজন’।

 فَدَلَّاهُمَا بِغُرُورٍ فَلَمَّا ذَاقَا الشَّجَرَةَ بَدَتْ لَهُمَا سَوْآتُهُمَا وَطَفِقَا يَخْصِفَانِ عَلَيْهِمَا مِنْ وَرَقِ الْجَنَّةِ وَنَادَاهُمَا رَبُّهُمَا أَلَمْ أَنْهَكُمَا عَنْ تِلْكُمَا الشَّجَرَةِ وَأَقُلْ لَكُمَا إِنَّ الشَّيْطَانَ لَكُمَا عَدُوٌّ مُبِينٌ22. 7 
২২। ফাদাল্লা-হুমা-বিগুরূরিন্ ফালাম্মা- যা-ক্বাশ্ শাজ্বারতা বাদাত্ লাহুমা- সাওআ-তুহুমা-অ ত্বোয়াফিক্বা-ইয়াখ্ছিফা-নি ‘আলাইহিমা- মিওঁ অরাক্বিল্ জান্নাহ্, অ না-দা-হুমা- রব্বুহুমা য় আলাম্ আন্হাকুমা- ‘আন্ তিল্কুমাশ্ শাজ্বারতি অআকুল্ লাকুমা য় ইন্নাশ্ শাইত্বোয়া-না লাকুমা-‘আদুওয়্যুম্ মুবীন্। 
২২ অতঃপর সে তাদেরকে প্রতারণার মাধ্যমে পদস্খলিত করল। তাই তারা যখন গাছটির ফল আস্বাদন করল, তাদের সামনে তাদের লজ্জাস্থান প্রকাশিত হয়ে গেল। আর তারা জান্নাতের পাতা দিয়ে নিজদেরকে ঢাকতে লাগল এবং তাদের রব তাদেরকে ডাকলেন যে, ‘আমি কি তোমাদেরকে ঐ গাছটি থেকে নিষেধ করিনি এবং তোমাদেরকে বলিনি যে নিশ্চয় শয়তান তোমাদের জন্য স্পষ্ট শত্রু?

 قَالَا رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنْفُسَنَا وَإِنْ لَمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ 23 
২৩। ক্ব-লা-রব্বানা- জোয়ালাম্না- আন্ফুসানা- অইল্লাম্ তার্গ্ফিলানা-অর্তাহাম্না-লানাকূনান্না মিনাল্ খা-সিরীন্। 
২৩ তারা বলল, ‘হে আমাদের রব, আমরা নিজদের উপর যুল্ম করেছি। আর যদি আপনি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন এবং আমাদেরকে রহম না করেন তবে অবশ্যই আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হব’।

 قَالَ اهْبِطُوا بَعْضُكُمْ لِبَعْضٍ عَدُوٌّ وَلَكُمْ فِي الْأَرْضِ مُسْتَقَرٌّ وَمَتَاعٌ إِلَى حِينٍ24
 ২৪। ক্ব-লাহ্বিত্বুবা’দ্বুকুম্ লিবা’দ্বিন্ ‘আদুওয়্যুন্ অলাকুম্ ফিল্র্আদ্বি মুস্তার্ক্বারুওঁ অমাতা-‘উন্ ইলা-হীন্। 
২৪ তিনি বললেন, ‘তোমরা নেমে যাও। তোমরা একে অপরের শত্র“ এবং যমীনে তোমাদের জন্য ক্ষণস্থায়ী আবাস ও ভোগ-উপকরণ রয়েছে’।

 قَالَ فِيهَا تَحْيَوْنَ وَفِيهَا تَمُوتُونَ وَمِنْهَا تُخْرَجُونَ25 
২৫। ক্ব-লা ফীহা-তাহ্ইয়াওনা অফীহা-তামূতূনা অমিন্হা-তুখ্রজুন্। 
২৫ তিনি বললেন, ‘তোমরা তাতে জীবন যাপন করবে এবং তাতে মারা যাবে। আর তা থেকে তোমাদেরকে বের করা হবে’। 

يَا بَنِي آدَمَ قَدْ أَنْزَلْنَا عَلَيْكُمْ لِبَاسًا يُوَارِي سَوْآتِكُمْ وَرِيشًا وَلِبَاسُ التَّقْوَى ذَلِكَ خَيْرٌ ذَلِكَ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ لَعَلَّهُمْ يَذَّكَّرُونَ26 
২৬। ইয়া-বানী য় আ-দামা ক্বাদ্ আন্যাল্না- ‘আলাইকুম্ লিবা-সাইঁ ইয়ুওয়া-রী সাও আ-তিকুম্ অরীশা-; অ লিবা-সুত্তাক্বাওয়া- যা-লিকা খার্ই; যা-লিকা মিন্ আ-ইয়া-তিল্লা-হি লা‘আল্লাহুম্ ইয়ায্যাক্কারূন্। 
২৬ হে বনী আদম, আমি তো তোমাদের জন্য পোশাক অবতীর্ণ করেছি, যা তোমাদের লজ্জাস্থান ঢাকবে এবং যা সৌন্দর্যস্বরূপ। আর তাকওয়ার পোশাক, তা উত্তম। এগুলো আল্লাহর আয়াতসমূহের অন্তর্ভুক্ত। যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।

 يَا بَنِي آدَمَ لَا يَفْتِنَنَّكُمُ الشَّيْطَانُ كَمَا أَخْرَجَ أَبَوَيْكُمْ مِنَ الْجَنَّةِ يَنْزِعُ عَنْهُمَا لِبَاسَهُمَا لِيُرِيَهُمَا سَوْآتِهِمَا إِنَّهُ يَرَاكُمْ هُوَ وَقَبِيلُهُ مِنْ حَيْثُ لَا تَرَوْنَهُمْ إِنَّا جَعَلْنَا الشَّيَاطِينَ أَوْلِيَاءَ لِلَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ27
 ২৭। ইয়া-বানী য় আ-দামা লা- ইয়াফ্তিনান্নাকুমুশ্ শাইত্বোয়া-নু কামায় আখ্রজ্বা আবাওয়াইকুম্ মিনাল্ জ্বান্নাতি ইয়ান্যি‘উ ‘আন্হুমা-লিবা-সাহুমা-লিইয়ুরিয়াহুমা- সাওআ-তিহিমা-; ইন্নাহূ ইয়ার-কুম্ হুঅ অক্বাবীলুহূ মিন্ হাইছু লা- তারাওনাহুম্; ইন্না- জ্বা‘আল্নাশ্ শাইয়া-ত্বীনা আওলিয়া - য়া লিল্লাযীনা লা-ইয়ুমিনূন্।
 ২৭ হে বনী আদম, শয়তান যেন তোমাদেরকে বিভ্রান্ত না করে, যেভাবে সে তোমাদের পিতা-মাতাকে জান্নাত থেকে বের করেছিল; সে তাদের পোশাক টেনে নিচ্ছিল, যাতে সে তাদেরকে তাদের লজ্জাস্থান দেখাতে পারে। নিশ্চয় সে ও তার দলবল তোমাদেরকে দেখে যেখানে তোমরা তাদেরকে দেখ না। নিশ্চয় আমি শয়তানদেরকে তাদের জন্য অভিভাবক বানিয়েছি, যারা ঈমান গ্রহণ করে না।

Friday, May 9, 2025

মৃ*ত্যুর পর মানুষের নয়টি আফসোস




— মৃ*ত্যুর পর মানুষের নয়টি আফসোস—           

                                                                              
১.“হায়! আমি যদি মাটি হয়ে যেতাম।”
[সূরা নাবা:৪০]

২.“হায়! যদি পরকালের জন্য কিছু করতাম।”
[সূরা ফজর:২৪]

৩.“হায়! আমাকে যদি আমার আমলনামা না দেওয়া হতো।”
[সূরা আল-হাক্কাহ:২৫]

৪.“হায়!আমি যদি ওকে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম।”
[সূরা ফুরকান;২৮]

৫.“হায়! আমরা যদি আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূল ﷺ এর আনুগত্য করতাম।”
[সূরা আহযাব:৬৬]

৬.“হায়! আমি যদি রাসূল ﷺ এর পথ অবলম্বন করতাম।”
[সূরা ফুরকান:২৭]

৭.“হায়! আমিও যদি তাদের সঙ্গে থাকতাম, তা হলে বিরাট সফলতা লাভ করতে পারতাম।”
[সূরা আন-নিসা:৭৩]

৮.“হায়! আমি যদি আমার রবের সঙ্গে কাউকে শরীক না করতাম।”
[সূরা কাহফ:৪২]

৯.“হায়! এমন যদি কোনো সুরত হতো আমাদেরকে আবার দুনিয়াতে পাঠানো হতো, আমরা আমাদের প্রভুকে মিথ্যা প্রতিপন্ন না করতাম আর আমরা হতাম ঈমানদারদের শামিল।”
[সূরা আনআম:২৭]

Thursday, May 8, 2025

বিবি মরিয়ম (আঃ) জীবনী



✅ বিবি মরিয়ম (আঃ) জীবনী :


বিবি মরিয়মের পিতার নাম ছিল ইমরান (আঃ)। মাতার নাম ছিল বিবি হান্না। তিনি মান্নত করলেন, হে আল্লাহ্ আমার গর্ভে যেই ছেলে হবে, তাকে বায়তুল মোকাদ্দাস মসজিদের খেদমতের জন্য তোমার জন্যেই আজাদ করে দিব'। এর পর বিবি মরিয়ম জন্মগ্রহণ করলেন, তখন বিবি হান্না চিন্তিত হয়ে পড়লেন, কেননা, তিনি আশা করছিলেন ছেলে হবে, এখন মেয়েকে কিভাবে মসজিদে দিবেন, তিনি আকাশের দিকে তাকায়ে বললেন, হে প্রভু! আমি একটি মেয়ে সন্তান প্রসব করেছি, আর তার নাম রাখলাম মরিয়ম, তাকে তোমার আশ্রয়ে সোপর্দ করতেছি, এমন সময় এলহাম হলো হে হান্না! আমি তাকে কবুল করেছি বিবি হান্না মান্নত পুরা করার জন্য বায়তুল মোকাদ্দাসে উপস্থিত হলেন, সমবেত বুযুর্গগণের নিকট আরয করলেন, এই মেয়েটি মান্নতের, ইহাকে রাখুন। সকলেই মেয়েটির রূপে মুগ্ধ হয়ে তাকে লালন-পালন করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করলেন, কেননা, সে তাহাদের ইমাম ইমরানের কন্যা। তখন সাব্যস্ত হল লটারী দেওয়া হউক। প্রত্যেকে নিজ নিজ কলম জর্দান নদীতে ফেলে দিবে। যার কলম ডুবে যাবে না, পানির উপর ভেসে থাকবে আর স্রোতের বিপরীত দিকে যাবে, সে মরিয়মের দায়িত্ব ভার গ্রহণ করবে। এরপর সকলে কলম ফেলে দিল। সকলের কলম ডুবে গেল। শুধু জাকারিয়া (আঃ)-এর কলম পানির উপর ভেসে রইল এবং স্রোতের বিপরীত দিকে অগ্রসর হলো, তখন জাকারিয়া (আঃ) তার দায়িত্ব ভার গ্রহণ করলেন।

তার স্ত্রী মরিয়মের খালা ছিলেন। তিনি তার লালন-পালন করতে লাগলেন এবং তার জন্য মসজিদে একটি হুজরা নির্মাণ করলেন। মরিয়ম দিনের বেলায় সেই হুজরায় ইবাদত করতেন, রাত্রে জাকারিয়া (আঃ) তাহাকে নিজের সঙ্গে বাড়ীতে নিয়া যাইতেন। একদিন মরিয়মকে হুজরার ভিতরে রেখে তালা লাগায়ে তিনি কোথায় যেন চলে যান। মরিয়ম তিন দিন পর্যন্ত সেখানে আবদ্ধ ছিলেন। জাকারিয়া (আঃ) তার কথা ভুলে গিয়েছিলেন। চতুর্থ দিন তার কথা স্মরণ হওয়া মাত্র তিনি চিৎকার দিয়ে দৌড়ায়ে গেলেন, আর আফসোস করে বলতে লাগলেন(আহা আমি কি করলাম, নিরাপরাধ মেয়ে হয়তো ক্ষুধা তৃষ্ণায় মারা গিয়াছে। মসজিদে গিয়ে মরিয়মের হুজরার দরজা খুলে দেখেন তার সামনে নানা প্রকার ফল। তিনি মরিয়মকে জিজ্ঞেস করেন তুমি এই খাবার কোথায় পেয়েছ? মরিয়ম বলেন, ইহা আল্লাহর পক্ষ হইতে আসিয়াছে। ফেরেশতাগণ মরিয়মকে বলিলেন, হে মরিয়ম। আল্লাহ পাক তোমাকে সমগ্র জগতের মহিলাদের উপর মর্যাদা ও সম্মান দান করেছেন, পবিত্র করেছেন, তুমি তোমার প্রভুর বন্দেগী কর, তাকে সিজদা কর। রুকু কর।মরিয়মের বয়স যখন চৌদ্দ বৎসর, তখন তিনি হায়েজের গোসল করার জন্য গোসলখানায় ঢোকেন, ইহাই তার প্রথম হায়েজ ছিল, যখন গোসল করে অবসর হলেন, তখন দেখলেন অতি সুন্দর চেহারার এক যুবক তার পিছনে দাঁড়ায়ে আছে, সেই যুবকটা ছিল জিব্রাঈল (আঃ)। তিনি যুবককে দেখে ভয় পাইলেন, আর বললেন আমি সতী নারী, আমি আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করি, যুবকটি বললো আমি জিব্রাইল (আঃ) তোমাকে একটি পবিত্র ছেলে দান করার জন্য এসেছি। মরিয়ম বললো আমার ছেলে হবে কি করে, অথচ কোন পুরুষ আমাকে স্পর্শ করে নাই, তাছাড়া আমি যিনাকারিণী নই। জিব্রাইল (আঃ) বললেন, তোমার প্রভু বাপ ছাড়া ছেলে দান করে মানুষের জন্য একটি নিদর্শন রাখতে চান, এই বলে তার মুখের উপরে একটি ফুঁক দিয়ে চলে যান, সেই ফুঁকটি যাইয়া মরিয়মের পেটের মধ্যে ঢুকিয়া হাওয়া হইতে আওয়াজ আসল, আমি আল্লাহ্র বান্দা। আল্লাহ্ একা তারপর মরিয়ম মসজিদে গিয়া আল্লাহর ইবাদতে মশগুল হয়ে গেলেন। কয়েক মাসের মধ্যে এই কথা প্রচার হয়ে গেল। ইহুদীগণ বলিল, হে মরিয়ম! তুমি অবিবাহিত মেয়ে হয়ে এই গর্ভ কোথায় পাইলে, তুমি বদকার নারী। মরিয়মের যখন প্রসব বেদনা শুরু হলো তিনি কাঁদতে লাগলেন, আর বলতে লাগলেন, হে আল্লাহ্ গো, সন্তান প্রসব হওয়ার পূর্বে আমি যদি মারা যেতাম কতই না ভাল হইত। এই বলে বায়তুল মোকাদ্দাস মসজিদ হইতে বের হয়ে গোপন এক ময়দানে চলে গেলেন, সেখানে গিয়ে তিনি একটি মরা খেজুর গাছের গোড়ায় বসিলেন, আর খেজুর গাছের সাথে ঠেস দিয়া নির্জনে বসিয়া কাঁদিয়া কাঁদিয়া বলতে লাগলেন, হে আল্লাহ গো! মেয়েদের প্রসব বেদনা আরম্ভ হলে, মা, চাচী কাছে থাকে, নানি, দাদী কাছে থাকে, আমার তো কেহ নেই, আমি কোথায় যাইবো, কি করিব এই বলে রোদন করতেছেন। এই সময় আমার আল্লাহ্ পাক ডাক দিয়ে বলেন, মরিয়মরে! তোর পাশে আমি আছি, তখন সেখানে ঈসা (আঃ)-এর জন্ম হলো। ফেরেশতারা আর বেহেশতের হুরগণ এসে তার সেবা যত্ন করতে লাগলেন, আল্লাহ পাকের হুকুমে মরা খেজুর গাছ তাজা হয়ে উহার মধ্যে খেজুর ধরল এবং উহার নীচে একটি ঝরনা হল, হাউজে কাউসারের পানি এনে হুরগণ ঈসা (আঃ) কে গোসল করায়ে বেহেশতের পোশাক পরায়ে দিলেন। তারপর মরিয়মের কোলে তুলে দিলেন। এমন সময় তার পুত্র ঈসা (আঃ) একটি চিৎকার দিয়ে বললেন, হে আমার আম্মাজান! আমাকে দেখে আপনার চক্ষু শীতল করুন। মরিয়মের পায়ের নীচ হইতে একটি আওয়াজ এলো, হে মরিয়ম, তুমি দুঃখিত হইওনা! তোমার প্রভু তোমার জন্য একটি ঝরণা সৃষ্টি করে দিয়েছেন মরিয়ম তাকায়ে দেখেন, একটি ঝরণা, প্রাণ ভরে পানি পান করলেন, খেজুর গাছের দিকে তাকায়ে দেখেন কাঁচা ও পাকা খেজুর ঝুলতেছে, তিনি আওয়াজ শোনতে পেলেন, কে যেন বলতেছে, তোমার দিকে খেজুরের ডাল নাড়া দাও। ইহাতে তোমার উপর তাজা ও পাকা খেজুর পড়বে। তুমি তাহা খাও। তিনি আরজ করলেন, হে এলাহী যখন জাকারিয়া (আঃ) আমাকে তিন দিন পর্যন্ত ভুলে হুজরার মধ্যে তালা বন্ধ করে গিয়েছিল, তখন তুমি আমাকে বিনা কষ্টে রিজিক দিয়েছ। আর এখন হুকুম দিলা গাছ হইতে খেজুর পাড়িয়া খাইতে। তখন আল্লাহর পক্ষ হতে আওয়াজ আসল- হে মরিয়ম, তখন তুমি আমাকে ছাড়া আর কাহাকেও মহব্বত কর নাই। এখন তুমি ছেলেকে মহব্বত করতেছ। তাই এখন তোমার মেহনত করে খাইতে হবে কয়েক দিন পর তুমি বায়তুল মোকাদ্দাস মসজিদে চলে যেও, কেহ কোন কথা জিজ্ঞেস করলে তুমি ঈসা (আঃ)-এর দিকে ইশারা করিও।

Friday, April 25, 2025

জাহান্নাম কেমন হবে?



⛔⛔ নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন জিবরাঈল (আ.)-কে বললেন,
আপনি যতোবার আমার নিকট এসেছেন, 
ততোবারই আপনার কপালে শোক ও 
দুশ্চিন্তার ছাপ ছিলো? এর কারণ কি?


জিবরাঈল (আ.) নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি 
ওয়া সাল্লাম-এর প্রশ্নের জবাবে বললেন, 
"জাহান্নাম সৃষ্টির পর থেকে 
আমার ঠোঁটে, চোখে ও মুখে কখনো হাসি ফুটেনি।"

জাহান্নাম কেমন হবে?


১. জাহান্নামের গভীরতা এমন যে,
এর মুখ থেকে একটি পাথর ফেলে দিলে 
জাহান্নামের তলদেশে পৌঁছাতে ৭০ বছর সময় লাগে। বিচারের দিন জাহান্নামকে ৭০ হাজার শিকল দ্বারা টেনে আনা হবে, যার প্রত্যেক শিকল ৭০ হাজার ফেরেশতা বহন করবেন।

২. জাহান্নামে চাঁদ এবং সূর্যকে নিক্ষেপ করা হবে আর জাহান্নামে তা অবলীলায় হারিয়ে যাবে।

৩. জাহান্নামবাসীদের শরীরের চামড়া 
১২৬ ফুট পুরো করে দেওয়া হবে, যাতে করে আযাব অত্যন্ত ভয়াবহ কঠিন হয়। তাদের শরীরে আরও থাকবে তিল, যার এক একটি উহুদ পাহাড়ের সমান।

৪. প্রতিদিন জাহান্নামের আযাব পূর্বের দিন থেকে আরও তীব্র আর ভয়াবহ কঠিন করা হবে।

৫. জাহান্নামের খাদ্য হবে কাঁটাযুক্ত গাছ। আর পানীয় হবে ফুটন্ত পানি, পুঁজ ও রক্তের মিশ্রণ এবং উত্তপ্ত তেল। এরপরও জাহান্নামবাসীর পিপাসা এতো বেশি হবে যে, তারা এই পানীয় পান করতে থাকবে।

৬. জাহান্নামের এই ভয়াবহ কঠিন কল্পনাতীত আযাব অনন্তকাল ধরে চলতে থাকবে।
জাহান্নামবাসীরা এক পর্যায়ে জাহান্নামের দেয়াল টপকিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে, তাদেরকে লোহার হাঁতুড়ি দিয়ে আঘাত করে, পুনরায় জাহান্নামে ফেলে দেওয়া হবে।

এই জন্যই বলছি, আমার ভাইবোনরা আসুন, আমরা দীনের পথে চলি, ইসলাম মেনে চলি, আমাদের কখন, কি হবে আমরা কিন্তু কেউ জানি না?কেউ আমার সাথে যাবে না, আমার হিসাব আমাকেই দিতে হবে! দুনিয়াটা একটা ধোঁকা ও লালসাময়।

তাই আসুন, আমরা পবিত্র কুরআন- হাদিসের আদেশ-নিষেধ ও শরিয়াহ মোতাবেক চলে, ভয়াবহ কঠিন জাহান্নাম থেকে বাঁচি, আমাদের পরিবারকে বাঁচাই ও সারাবিশ্বের মুসলমানদেরকে বাঁচাই।

হে আল্লাহ! আপনি আমাকে, আমাদের পরিবারকে ও সারাবিশ্বের সকল মুসলমানকে, ভয়াবহ কঠিন জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা করুণ। 


Thursday, April 24, 2025

নামাযের খুশু খুযুর বাকি অংশ

নামাযের খুশু খুযুর বাকি অংশ:


হযরত আবু বকর ইবনে আবদুল্লাহ (রঃ) বলেন, 'তুমি যদি অনুমতি ব্যতীত এবং কোন মাধ্যম ছাড়াই তোমার রবের নিকট যেতে চাও, তবে যেতে পার।' জিজ্ঞেস করা হল, তা কি করে সম্ভব? তিনি বললেন, 'সুন্দরভাবে পরিপূর্ণরূপে ওষু করে জায়নামাযে দাঁড়িয়ে যাও; এভাবে তুমি বিনা অনুমতিতে মাওলার দরবারে প্রবেশ করলে, অতঃপর মাধ্যম ছাড়া কথা বল।'

• হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, 'অনেক সময় এমন হত যে, রাসূলুল্লাহ (ছঃ) আমাদের সাথে কথাবার্তায় মগ্ন রয়েছেন এবং আমরাও তাঁর সাথে কথাবার্তায় মগ্ন রয়েছি; ইতোমধ্যে নামাযের সময় উপস্থিত হয়েছে, তখন রাসূলুল্লাহ (ছঃ)-এর অবস্থা এমন হত যেন তিনি আমাদের চেনেন না এবং আমরাও তাঁকে চিনি না; আল্লাহ্ তা'আলার আযমত ও প্রতাপ তাঁকে আচ্ছন্ন করে ফেলত।'

নবী করীম (ছঃ) বলেছেন, 'নামাযে দাঁড়ানোর পর বান্দার দেহ যেমন হাজির থাকে, তেমন যদি তার অন্তরও হাজির না থাকে, তবে আল্লাহ্ তা'আলা এরূপ নামাযের প্রতি মোটেও দৃষ্টিপাত করেন না।'

হযরত ইবরাহীম (আঃ) নামাযে দাঁড়ানোর পর ভয়ে এতই কাঁপতেন যে, দূর থেকে তাঁর হৃৎপিণ্ডের কম্পনের শব্দ শোনা যেত।

হযরত সাঈদ তানুখী (রঃ) নামাযে দণ্ডায়মান হলে তাঁর অবারিত অশ্রু ধারা প্রবাহিত হয়ে গণ্ডদেশ ভিজে শাশ্রুতে পৌঁছত।

একদা এক ব্যক্তিকে নবী করীম (ছঃ) নামাযে হাতে দাড়ি সঞ্চালন করতে দেখে বলেন, 'এ ব্যক্তির অন্তরে খুশু ও একাগ্রতা থাকলে তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও স্থির থাকত।'

বর্ণিত আছে, হযরত আলী (রাঃ) নামাযে দাঁড়ালে ভয়ে কাঁপতেন এবং চেহারা বিবর্ণ হয়ে যেত। একদিন তাঁকে প্রশ্ন করা হল, 'হে আমীরুল মোমিনীন! নামাযে আপনার এ অবস্থার কারণ কি?' তিনি বললেন, 'তখন আল্লাহ্ তা'আলার
সেই আমানত আদায়ের সময় এসে যায়, যে আমানত বহন করতে আকাশ, পৃথিবী ও পর্বতসমূহ অস্বীকৃতি জানিয়েছিল; অথচ আমি তা বহন করেছি।'

হযরত আলী ইবনে হুসাইন (রাঃ) সম্পর্কে বর্ণিত আছে, তিনি যখন ওযূ করতেন তখন তাঁর চেহারা বিবর্ণ হয়ে যেত। লোকজন এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলতেন, 'তোমরা কি জান না, এরপর আমি কার দরবারে দণ্ডায়মান হব?

হযরত হাতেম আসাম (রঃ)-এর নিকট তাঁর নামায সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বললেন, যখন নামাযের সময় আসে, তখন আমি পরিপূর্ণরূপে ওযু করি। এর পর জায়নামাযে এসে কিছুক্ষণ ধীরস্থিরভাবে অপেক্ষা করি। এভাবে সম্পূর্ণ শান্ত হওয়ার পর নামাযের জন্য দাঁড়াই। তখন আমার অবস্থা এমন হয় যে, আমি মনে দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে ধ্যান করি, আল্লাহর পবিত্র ঘর কাবা আমার সামনে, পুলসেরাত আমার নীচে, জান্নাত আমার ডানে, জাহান্নাম আমার বামে এবং মৃত্যুর ফেরেশতা আযরাঈল (আঃ) আমার পিছনে। সে সঙ্গে এ কথাও দৃঢ়ভাবে মনে করি, এটাই আমার জীবনের শেষ নামায, এর পরেই আমার মৃত্যু, এর পর আর কোন নামাযের সুযোগ হবে না। এ চিন্তা করেই আমি আল্লাহ্ প্রতি ভয় ও আশার মধ্যবর্তী স্তরে থেকে অত্যন্ত বিনয়াবনত হয়ে, নম্রতা ও একাগ্রতার সাথে 'আল্লাহু আকবার' বলে নামায শুরু করি। এরপর সুস্পষ্ট ও ধীরস্থিরভাবে কেরাআত পাঠ করি। রুকু করি অত্যন্ত বিনয়ের সাথে। সেজদায় অবলম্বন করি পরিপূর্ণ একাগ্রতা ও নিষ্ঠা। বাম পা বিছিয়ে দিয়ে বাম নিতম্বে উপবেশন করি, ডান পা খাড়া রেখে অঙ্গুলি কেবলার দিকে ফিরিয়ে রাখি এবং অন্তরে পরিপূর্ণ একাগ্রতা ও আল্লাহর ভয় জাগ্রত রাখি। এরপরেও আমি বলতে পারি না, আমার নামায আল্লাহর দরবারে গৃহীত হয়েছে কি না?

হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, 'আন্তরিক নিষ্ঠা ও ধ্যানমগ্নতা সহকারে দু'রাকাত নামায পড়া উদাসীন অন্যমনস্ক অবস্থায় সারারাত নামায পড়ার চেয়ে উত্তম।'

○ নবী করীম (ছঃ) বলেন, 'আখেরী যমানায় আমার উম্মতের মধ্যে কিছু লোক এমন হবে, যারা মসজিদে হাজির হবে, কিন্তু সেখানে মজলিস অনুষ্ঠান করে তারা পার্থিব আলোচনায় লিপ্ত হবে; তাদের অন্তরে দুনিয়ার মহব্বত বিরাজিত। সাবধান, এসব লোকের সংস্পর্শে যেও না। কেননা, আল্লাহ্ তা'আলা এদের প্রতি অসন্তুষ্ট।'

- হযরত হাসান (রঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করীম (ছঃ) বলেছেন, "আমি কি তোমাদের বলব, পৃথিবীর নিকৃষ্টতম চোর কে?' সাহাবায়ে কেরাম আরজ করলেন, নিশ্চয়ই বলুন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! নবী করীম (ছঃ) বললেন,
সবচেয়ে নিকষ্ট চোর হচ্ছে সে ব্যক্তি যে নামাযে চুরি করে।' সাহাবীরা আরজ করলেন, 'ইয়া রাসূলাল্লাহ! নামাযে চুরি করা হয় কিভাবে? আল্লাহর রাসূল (ছঃ) বললেন, 'রুকু সেজদা পরিপূর্ণভাবে আদায় না করাই নামাযে চুরি করা।'

✅✅✅✅✅✅✅✅✅✅✅✅✅✅
রাসূল (ছঃ) বলেন, কেয়ামত দিবসে সর্বাগ্রে নামায পরিত্যাগকারীদের জিজ্ঞেস করা হবে। কেউ পরিপূর্ণভাবে নামায আদায় করে থাকলে তার অন্যান্য বিষয়ের হিসাব সহজ করা হবে। আর ফরয নামাযে কোন ত্রুটি থাকলে আল্লাহ্ তা'আলা ফেরেশতাদের বলবেন, দেখ আমার বান্দার কোন নফল নামায আছে কি না; সেগুলো দিয়ে তার ফরয নামাযের ত্রুটি মুছে দাও।
✅✅✅✅✅✅✅✅✅✅✅✅✅✅

নবী করীম (ছঃ) বলেন, 'বান্দার জন্য সর্বোৎকৃষ্ট নেয়ামত হচ্ছে দু'রাকাত নামাযের তওফীক পাওয়া।'

✓ হযরত ওমর (রাঃ) যখন নামাযে দণ্ডায়মান হতেন, তখন তাঁর পাঁজর কাঁপত এবং উপর ও নীচের দাঁতগুলো পরস্পরের সাথে লেগে শব্দ হতে থাকত। এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলতেন, 'আল্লাহর আমানত আদায়ের সময় সন্নিকটে, জানি না আমি এ আমানত কিভাবে আদায় করব।'

• খালফ ইবনে আইয়ুব (রঃ) সম্পর্কে বর্ণিত আছে, একদিন তিনি নামায শুরু করলে তাঁকে ভীমরুল হুল ফুটিয়েছিল। ফলে হুল ফুটানো স্থান থেকে রক্ত বের হয়; অথচ তিনি তা মোটেও অনুভব করতে পারেননি। অবশেষে ইবনে সাঈদ এসে তাঁকে জানালে তিনি কাপড় ধৌত করেন। এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'যে ব্যক্তি মহাপরাক্রমশালী সত্তার সামনে দাঁড়ায়, পিছনে যার মৃত্যুর ফেরেশতা দণ্ডায়মান থাকে, যার বামে জাহান্নাম আর ডানে জান্নাত থাকে এবং তার পা থাকে পুলসেরাতের উপর, সে-কি এসব বিষয় কখনও অনুভব করতে পারে?'

হযরত ইবনে যর (রঃ)-এর হাতে এক সময় একটি ফোঁড়া হয়েছিল। তিনি অধ্যাত্ম জগতে অতি উচ্চ মর্যাদার অধিকারী ছিলেন। চিকিৎসকরা বলেছিলেন, 'এ মারাত্মক ফোঁড়া হতে বাঁচতে হলে আপনার হাত কেটে ফেলতে হবে।' তিনি অনুমতি দিয়েছিলেন। চিকিৎসকরা বলেন, 'তবে আপনাকে রশি দিয়ে ভালভাবে বেঁধে তারপর কাটতে হবে, অন্যথা আপনি অসহনীয় কষ্টে ছুটাছুটি করতে থাকবেন, এতে আরো মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যাবে।' তিনি বললেন, না, এসবের প্রয়োজন নেই; বরং আমি নামায শুরু করলে তোমরা আমার হাত কেটে নিও।' অনন্তর নামাযরত অবস্থায় তাঁর হাত কাটা হয়েছিল, তিনি তা মোটেও অনুভব করতে পারেননি।

Tuesday, April 22, 2025

নামাযে খুশু খুযু

✅ নামাযে খুশু খুযু:

বিনম্র আত্মসমর্পণ ও একাগ্রতার সাথে নামায আদায় করার নাম খুশু-খুযু।

আল্লাহ্ তা'আলা এরশাদ করেছেন-

قَدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ هُمْ فِي صَلُوتِهِمْ خَشِعُونَ .

-'নিশ্চয়ই মু'মিনরা সফলকাম, যারা নিজেদের নামাযে বিনয়ী।'

-সূরা মু'মিনুন: ১২


আয়াতে উল্লিখিত 'খুশু'র ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে অনেকের বক্তব্য হল, এটা আত্মার সাথে সম্পর্কিত আমল। যেমন ভয় ও শঙ্কার সম্পর্ক আত্মার সাথে, তেমনি খুশুও একটি আত্মিক আমল। আবার অনেকে খুশুকে বাহ্যিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সাথে সম্পর্ক করে এটা বাহ্যিক আমল বলে মন্তব্য করেছেন। যেমন দৈহিক স্থিরতা-ধীরতা, এদিক-সেদিক দৃষ্টি না করা, অযথা অঙ্গ সঞ্চালন না করা; নামাযের মাঝে এগুলো বাহ্যিক আমলের সাথে সম্পর্কিত বিষয়। তদ্রূপ অনেকের মতে, নামাযের জন্য খুশু অপরিহার্য, অর্থাৎ এটা একান্ত ফরয বিষয়। অপরদিকে অনেকে খুশুকে নামাযের জন্য ফযীলত ও মুস্তাহাব বলে আখ্যায়িত করেছেন। ফরয আখ্যাদানকারীরা দলীল হিসাবে যে হাদীস উপস্থাপন করে থাকেন তা হল:

ليْسَ لِلْعَبْدِ مِنْ صَلُونِهِ إِلَّا مَا عَقَلَ .

-'নামাযের যে পরিমাণ অংশ বান্দা বুঝে আদায় করে, তার নামাযের ওই পরিমাণ অংশই কবুল করা হয়।' তদ্রূপ তারা দলীল হিসাবে আয়াতও উল্লেখ করেছেন-

واقم الصلوة الذكرى.

-'এবং আমার স্মরণে নামায কায়েম কর।' -সূরা তোয়াহা : ১৪

আল্লাহর যিকির করতে হলে শৈথিল্য, উদাসীনতা ও অবহেলা পরিহার করতে হবে। কালামে পাকে এরশাদ হয়েছে-

وَلَا تَكُنْ مِنَ الْغَفِلِينَ .

-'এবং উদাসীনদের দলভুক্ত হয়ো না।' ।'-সূরা আ'রাফ: ২০৫

ইমাম বায়হাকী (রঃ) মুহাম্মদ ইবনে সীরীন (রঃ) থেকে বর্ণনা করেন, অত্র আয়াত নাযিলের কারণ হচ্ছে, নবী করীম (ছঃ) নামাযে আকাশপানে দৃষ্টি উঁচু করে দেখতেন, এ আয়াতে তা নিষেধ করা হয়েছে। মুসনাদে আবদুর রাযযাকের সূত্রে এ অংশটুকুও অতিরিক্ত বর্ণিত রয়েছে, অতঃপর তাঁকে নামাযে 'খুশু' অবলম্বন করার আদেশ করা হয়েছে। তজ্জন্য তিনি নামাযে দৃষ্টি সেজদার স্থানে নিবদ্ধ করে রাখতেন।

হাকেম ও বায়হাকী হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, নবী করীম (ছঃ) নামাযে দৃষ্টি আসমানের দিকে উঁচু করার প্রেক্ষিতে এ আয়াত অবতীর্ণ হয়; এর পর থেকে তিনি নামাযে দৃষ্টি নীচু করে রাখতেন।

হযরত হাসান (রঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম (ছঃ) বলেছেন, 'পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের উপমা হল, তোমাদের কারো বাড়ির সামনে যদি একটি নহর থাকে আর তাতে যদি প্রচুর পানি থাকে, সেখানে যদি সে দৈনিক পাঁচ বার গোসল করে, তবে তার দেহে কি সামান্যতম ময়লাও অবশিষ্ট থাকবে?'

নামায দ্বারা মানুষ পাপ পঙ্কিলতা থেকে মুক্ত পবিত্র হয়ে যায়, কবীরা গুনাহ ছাড়া অন্য সব ধরনের গুনাহ মাফ হয়ে যায়। এ মর্যাদা অর্জন করতে হলে বিনম্র আত্মসমর্পণ ও নিষ্ঠার সাথে নামায পড়তে হবে। মন নামাযে উপস্থিত রাখতেহবে,নতুবা নামাজ তার আদায়কারীর মুখে নিক্ষেপ করা হবে। রাসূলে করীম । (ছঃ) বলেছেন-

منْ صَلَّى رَكَعَتَيْنِ لَمْ يَحْدُتْ نَفْسَهُ فِيهِمَا بِشَيْ مِنَ الدُّنْيَا غَفَرَ الله ما تقدم من من ذنبه .

'যে ব্যক্তি পার্থিব ধান্ধা চিন্তা থেকে মুক্ত পবিত্র মন নিয়ে দু'রাকাত (নামায আদায় করবে, আল্লাহ্ পাক তার বিগত সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন।'

• অন্য এক হাদীসে বর্ণিত আছে, 'নামায, হজ্জ, তাওয়াফ এবং হজ্জের অন্যান্য বিধানাবলী ইত্যাদি ইবাদত এজন্য প্রদান করা হয়েছে যে, এসব ইবাদত দ্বারা আল্লাহ্ তা'আলাকে স্মরণ করা হবে, কিন্তু এগুলো পালনকালে যে মহান সত্তাকে স্মরণ করা উদ্দেশ্য, যদি তাঁকে স্মরণ করা না হয়, তবে এ যিকির ও ইবাদত অর্থহীন কাজে পরিণত হয়।' নবী করীম (ছঃ) আরও বলেছেন-

من لم تنهى صلونَهُ عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنْكَرِ لَمْ يَزْدَهُ مِنَ الله إِلَّا بُعدًا .

'যে ফরয নামায তাকে অশ্লীলতা ও অপছন্দনীয় কর্ম থেকে বিরত রাখতে পারল না, সে ব্যক্তি ক্রমেই আল্লাহর নৈকট্য থেকে দূরে সরে যাবে।'

(বাকি অংশ আগামীকাল আসবে ইনশাআল্লাহ)

Friday, April 18, 2025

কিয়ামতের কিছু ছোট আলামত

"কিয়ামতের কিছু ছোট আলামত "


১। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এর আগমণ ও মৃত্যু বরণ(মুসলিম)
২।ধন-সম্পদ বৃদ্ধি পাবে(মুসলিম)
৩।কিয়ামতের পূর্বে অনেক ফিতনার আবির্ভাব হবে(তিরমিজী)
৪।ভন্ড ও মিথ্যুক নবীদের আগমণ হবে(আবু দাউদ, তিরমিযী)
৫।আমানতের  খেয়ানত হবে(বুখারী)
৬।দ্বীনী ইলম উঠে যাবে এবং মূর্খতা বিস্তার লাভ করবে(বুখারী)
৭।অন্যায়ভাবে যুলুম-নির্যাতনকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে(মুসনাদে আহমাদ)
৮।যেনা-ব্যভিচার বৃদ্ধি পাবে(বুখারী,মুসলিম)
৯।সুদখোরের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে(বুখারী)
১০।গান বাজনা এবং গায়িকার সংখ্যা বেড়ে যাবে(ইবনে মাজাহ)
১১।মদ্যপান হালাল মনে করবে(বুখারী)
১২।দালান-কোঠা নির্মাণে প্রতিযোগিতা
করবে(মুসলিম)
১৩।দাসী তার মনিবকে প্রসব করবে,(মুসলিম)
১৪। সময় দ্রুত চলে যাবে(মুসনাদে আহমাদ ও তিরমিজী)
১৫।মুসলমানেরা শির্কে লিপ্ত হবে(তিরমিজী) 
১৬।ঘন ঘন বাজার হবে(মুসনাদে আহমাদ,মাজমাউয্ যাওয়ায়েদ) 
১৭।আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা হবে,(মুসনাদে আহমাদ)
১৮।লোকেরা কালো রং দিয়ে চুল-দাড়ি রাঙ্গাবে(আবূ দাঊদ) 
১৯।কৃপণতা বৃদ্ধি পাবে(ফাতহুলবারী)
২০। ব্যবসা বাণিজ্য ছড়িয়ে পড়বে(মুসনাদে আহমাদ) 
২১।ভূমিকম্প বৃদ্ধি পাবে(বুখারী)
২২। ভূমিধস ও চেহারা বিকৃতির শাস্তি দেখা দিবে(তিরমিযী,ইবনে মাজাহ) 
২৩।পরিচিত লোকদেরকেই সালাম দেয়া হবে(মুসনাদে আহমাদ)
২৪।বেপর্দা নারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে(মাজমাউজ্ জাওয়ায়েদ)
২৫। মিথ্যা কথা বলার প্রচলন বৃদ্ধি পাবে(মুসলিম)
২৬।মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়ার প্রচলন ঘটবে(মুসনাদে আহমাদ)
২৭।মহিলার সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং পুরুষের সংখ্যা কমে যাবে(বুখারী)
২৮।হঠাৎ মৃত্যু বরণকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে(মাজমাউয্ যাওয়ায়েদ,সহীহুলজামে আস্ সাগীর)
২৯।আরব উপদ্বীপ নদ-নদী এবং গাছপালায় পূর্ণ হয়ে যাবে,(মুসলিম)
৩০।ফোরাত নদী থেকে স্বর্ণের পাহাড় বের হবে,বুখারী(মুসলিম)
৩১।জড় পদার্থ এবং হিংস্র পশু মানুষের সাথে কথা বলবে(মুসনাদে আহমাদ)

Monday, April 14, 2025

এক রাজা ও তার মন্ত্রীকে একটি শিক্ষণীয় গল্প



একটি শিক্ষণীয় গল্প এক মিনিট সময় নিয়ে হলেও সবাই পড়বেন উপকৃত হবেন!!


একবার এক রাজা তার তিন মন্ত্রীকে ডেকে বললেন,এই নাও তোমাদের একটা করে খালি বস্তা দিলাম। তোমাদের কাজ হবে বনে গিয়ে বিভিন্ন ফল কুড়িয়ে এই বস্তা ভরে নিয়ে আসবে, দেখি কে কত তাড়াতাড়ি বস্তা পূর্ণ করে নিয়ে আসতে পার। তিন জন চলে গেল জঙ্গলে।
🔶১ম মন্ত্রী চিন্তা করলো, রাজা বলেছেন তাই ভালো ভালো ফল কুড়িয়ে বস্তা পূর্ণ করি এবং সেই মত জঙ্গলের ভালো ফল কুড়িয়ে বস্তা ভরে ফিরে আসল।

🔶২য় মন্ত্রী চিন্তা করলো, রাজা তো সব ফল দেখবেন না তাই হাবিজাবি পচা ফল দিয়ে সে নীচের দিকে পূর্ণ করে, উপরের দিকে শুধু কিছু ভালো ফল দিয়ে বস্তা পূর্ণ করলো এবং ফিরে আসল।

🔶৩য় মন্ত্রী চিন্তা করলো, রাজার এত সময় কোথায় বস্তা খুলে খুলে দেখবে, সে শুধু দেখবে বস্তা পূর্ণ হয়েছে কিনা। জঙ্গলে মরা পাতা, ঘাস,কাঠ দিয়ে বস্তা পূর্ণ করে নিয়ে এলো।

তিন মন্ত্রী রাজার দরবারে হাজির, রাজা সবার বস্তা পূর্ণ দেখে খুশী হলেন।তিনি বস্তাগুলো খুলেও দেখলেন না।৩য় মন্ত্রী নিজের বুদ্ধির কথা চিন্তা করে নিজেকে বেশ বুদ্ধিমান মনে করতে লাগলো। রাজা একটু সময় নিয়ে তার মসনদে বসলেন এবং ঘোষণা করলেন, এই তিন মন্ত্রীদের তাদের বস্তা সহ ৭ দিনের জন্য কারাগারে পাঠানো হোক এবং প্রত্যেককে তিনটা আলাদা আলাদা কক্ষে রাখা হোক। এই ৭ দিন তাদের কোন প্রকার খাবার দেওয়া হবে না।

যেই কথা সেই কাজ, তিনজনকেই কারাগারে পাঠানো হলো। ১ম মন্ত্রী এই ৭ দিন তার বস্তার ফলগুলো খেয়ে কাটিয়ে দিলেন।

দ্বিতীয় মন্ত্রী তার যত ভালো ফল ছিল ২ দিন খেতে পারলো, বাকী দিন পচা ফল খেয়ে কাটানোর চেষ্টা করলো কিন্তু তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লেন।

৩য় মন্ত্রীর বস্তায় কোন ফল ছিলোনা তাই তিনি না খেতে পেরে কারাগারেই মারা গেলেন।

🌸এই গল্পের শিক্ষণীয় বিষয় হলো:-
যদি আমরা ফাঁকি না দিয়ে সঠিকভাবে শিখে, পড়ালেখা বা কাজ করে বড় হই তবে এর ফল আমরা যখন কর্মক্ষেত্রে যাবো তখন ভোগ করতে পারবো।

শিক্ষণীয় গল্পটি ভালো লাগলে শেয়ার করে অন্যদের জানার সুযোগ করে দিবেন। 

Friday, April 11, 2025

নিজেকে যেভাবে ধাপে ধাপে পরিবর্তন করবেন

নিজেকে যেভাবে ধাপে ধাপে পরিবর্তন করবেন-


(১) সর্বপ্রথম নিজের নিয়ত ঠিক রাখবেন।

(২) আযান দেওয়ার পরপরই সালাত আদায় করবেন।

(৩) প্রত্যেক ওজুর পরে কালেমা শাহাদাত পাঠ করবেন।

(৪) ধীরে ধীরে নামাজ আদায় করবেন এবং নামাজের পর জিকির করবেন।

(৫) প্রতিদিন কোরআন তেলাওয়াতের জন্য সময় বের করবেন।

(৬) প্রতিটা কাজ বিসমিল্লাহ বলে শুরু করবেন।

(৭) নাটক, মুভি, মিউজিক থেকে দূরে আসুন আজই।

(৮) কারো সাথে দেখা হলে সালাম বিনিময় করুন।

(৯) আপনার বন্ধু আত্মীয়-স্বজনকে দ্বীনের দাওয়াত দেন।

(১০) নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করুন এবং হিংসা, গীবত, অহংকার থেকে বেঁচে থাকুন।

(১১) প্রতিদিন রাতে সূরা মূলক পাঠ করুন।

(১২) রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমান এবং তাহাজ্জুদ ও ফজরের নামাজের নিয়ত করুন।

(১৩) বেশি বেশি দোয়া ইস্তেগফার ও দুরুদ পাঠ করুন।

(১৪) নিজের চোখকে হেফাজত করুন।

(১৫) সপ্তাহের শুক্রবারকে বেশি গুরুত্ব দিন, এই দিনের প্রতিটি আমলই গুরুত্বের সাথে সম্পূর্ণ করার চেষ্টা করুন।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে বেশি বেশি আমল করার তৌফিক দান করুক। "আমিন"

Thursday, April 10, 2025

কুরআনের যে সূরাহ আপনাকে যে বিপদ থেকে রক্ষা করবে


শিখে রাখুন কাজে আসবে -


কুরআনের যে সূরাহ আপনাকে যে বিপদ থেকে রক্ষা করবে :


১) সূরা ফাতেহা আপনাকে আল্লাহর গজব থেকে রক্ষা করবে। 

২) সূরা ইয়াসিন কেয়ামতের দিন পিপাসার্ত হওয়া থেকে রক্ষা করবে। 

৩) সূরা ওয়াকিয়া দারিদ্র্যতা থেকে রক্ষা করবে। 

৪) সূরা মূলক কবরের আজাব থেকে রক্ষা করবে। 

৫) সূরা কাউসার শত্রুর অনিষ্ট থেকে রক্ষা করবে। 

৬) সূরা কাফিরুন মৃত্যুর সময় কুফরী থেকে রক্ষা করবে। 

৭) সূরা ইখলাস মুনাফিকী হতে রক্ষা করবে। 

৮) সূরা ফালাক হিংসুকের হিংসা থেকে রক্ষা করবে। 

৯) সূরা নাস যাবতীয় ওয়াসাওয়াসা থেকে রকম করবে। 

১০) সূরা দু'খান কেয়ামতের দিন ভয়াল অবস্থা হতে রক্ষা করবে। 

এক আল্লাহর সত্য বাণী আল কুরআনেই পারে সকল মুসলমানদের রক্ষা করতে। সকলে আমল গুলো করার চেষ্টা করুন, আল্লাহ আপনাকে রক্ষা করবে ইনশাআল্লাহ। 🤲💗

Tuesday, April 8, 2025

কিয়ামতের ১০টি বড় আলামত, যা আল্লাহ ও রাসুল (সা.) আমাদের জানিয়েছেন —

আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় দ্বীনি ভাই ও বোনেরা,

চলুন জেনে নেই কিয়ামতের ১০টি বড় আলামত, যা আল্লাহ ও রাসুল (সা.) আমাদের জানিয়েছেন —


1️⃣ ইমাম মাহদির আগমন
➡️ সত্য ও ইনসাফ কায়েম করবেন। উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ করবেন।

2️⃣ দাজ্জালের আগমন
⚠️ চরম ফিতনা নিয়ে আসবে, মিথ্যা দাবি করবে যে সে “রব”!
(সহিহ মুসলিম: ২৯৩৭)

3️⃣ ঈসা (আ.)-এর আগমন
🕋 তিনি দাজ্জালকে হত্যা করবেন এবং ইসলাম প্রতিষ্ঠা করবেন।

4️⃣ ইয়াজুজ-মাজুজের বের হওয়া
🌍 বিশাল ধ্বংসযজ্ঞ চালাবে দুনিয়ায়।
(সূরা আল-আম্বিয়া: ৯৬)

5️⃣ তিনটি বিশাল ভূমিধস
🔄 একবার পূর্ব দিকে, একবার পশ্চিমে ও একবার আরব ভূখণ্ডে।

6️⃣ আকাশ থেকে ধোঁয়া (দুখান) নেমে আসা
🌫️ যা সবাইকে ঢেকে ফেলবে।
(সূরা আদ-দুখান: ১০)

7️⃣ সূর্য পশ্চিম দিক থেকে উঠবে
⛔ তখন আর তাওবা কবুল হবে না।
(সহিহ মুসলিম: ১৫৭)

8️⃣ দাব্বাতুল আরদ – জমিনের একটি জীবের আগমন
🦎 সে মানুষের মুখে ছাপ মেরে দেবে, কে মুমিন কে কাফের।

9️⃣ জ্ঞান উঠিয়ে নেওয়া ও আলেমদের মৃত্যু
📚 ইসলামিক জ্ঞান অদৃশ্য হবে, ফিতনা বাড়বে।

🔟 ইয়েমেন দিক থেকে এক ভয়াবহ আগুন বের হওয়া
🔥 যা মানুষকে হাশরের মাঠের দিকে তাড়িয়ে নেবে।

Muhammad ৪৭:১৮
فَهَلْ يَنْظُرُوْنَ اِلَّا السَّاعَةَ اَنْ تَاْتِيَهُمْ بَغْتَةً ۚ فَقَدْ جَآءَ اَشْرَاطُهَا ۚ فَاَنّٰي لَهُمْ اِذَا جَآءَتْهُمْ ذِكْرٰىهُمْ 
সুতরাং তারা কি কেবল এই অপেক্ষা করছে যে, কিয়ামত তাদের উপর আকস্মিকভাবে এসে পড়ুক? অথচ কিয়ামতের আলামতসমূহ তো এসেই পড়েছে। সুতরাং কিয়ামত এসে পড়লে তারা উপদেশ গ্রহণ করবে কেমন করে?

☑️ সহিহ হাদিস থেকে কিয়ামতের বড় আলামতসমূহ

1️⃣ ইমাম মাহদি সম্পর্কে
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
"মাহদি আমার বংশধর হবেন। তাঁর নাম আমার নামের মতো এবং তাঁর পিতার নাম আমার পিতার নামের মতো হবে।"
(আবু দাউদ: ৪২৮২  সহিহ হাদিস)
---

কালেমার দাওয়াত
لَا إِلَٰهَ إِلَّا ٱللَّهُ مُحَمَّدٌ رَّسُولُ ٱللَّهِ
“আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসূল।”

---

স্মরণ করি ও ছড়িয়ে দিই!
سُبْحَانَ اللَّهِ – আল্লাহ পবিত্র ও মহান
ٱلْحَمْدُ لِلَّهِ – সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য
لَا إِلَٰهَ إِلَّا ٱللَّهُ – আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য উপাস্য নেই
ٱللَّهُ أَكْبَرُ – আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ
أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ – আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই

Monday, April 7, 2025

বিষধর প্রাণীর ক্ষতি থেকে নিরাপত্তা



বিষধর প্রাণীর ক্ষতি থেকে নিরাপত্তা।


আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত।
🟤 নবী (সাঃ) বলেছেন, 
যে লোক সন্ধ্যায় উপনীত হয়ে তিনবার বলে, 
اَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللّٰهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ
“আল্লাহ তা’আলার নিকট আমি তার সম্পূর্ণ কালামের ওয়াসীলায় আশ্রয় প্রার্থনা করি, সে সকল অনিষ্ট হতে যা তিনি সৃষ্টি করেছেন", ঐ রাতে কোন বিষ তার অনিষ্ট করতে পারবে না। 

সুহাইল (রাহঃ) বলেন, 
আমার পরিবারের লোকেরা এই দুআ শিখে তা প্রতি রাতে পড়ত। একদিন তাদের একটি মেয়ে দংশিত হয়, কিন্তু তাতে সে কোন যন্ত্রণা অনুভব করেনি।

সহীহঃ 
তা’লীকুর রাগীব (১/২২৬), মুসলিম সংক্ষিপ্তাকারে বর্ণনা করেছেন।
সুনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত), হাদিস নং ৩৬০৪
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস 
সোর্সঃ বাংলা হাদিস

তিন বার বিকালবেলা বলবে,
اَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللّٰهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ 
উচ্চারণ: 
আ‘ঊযু বিকালিমা-তিল্লা-হিত তা-ম্মাতি মিন শাররি মা খালাক্বা।
অর্থ: 
আল্লাহ্‌র পরিপূর্ণ কালেমাসমূহের ওসিলায় আমি তাঁর নিকট তাঁর সৃষ্টির ক্ষতি থেকে আশ্রয় চাই।

যে কেউ বিকাল বেলা এ দো‘আটি তিনবার বলবে, সে রাতে কোনো বিষধর প্রাণী তার ক্ষতি করতে পারবে না।

[আহমাদ ২/২৯০, নং ৭৮৯৮; নাসাঈ, আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লাইলাহ, নং ৫৯০; ইবনুস সুন্নী, নং ৬৮; আরও দেখুন, সহীহুত তিরমিযী ৩/১৮৭; সহীহ ইবন মাজাহ ২/২৬৬; তুহফাতুল আখইয়ার লি ইবন বায, পৃ. ৪৫।]